শক্তিমত্তার বিবেচনায় এই বিশ্বকাপ ভারত জিতবে, এমন অনুমান করাটা হয়তো সহজই। কিন্তু ক্রিকেট এমন একটা খেলা, যেখানে অনিশ্চয়তা থাকবেই। সে কারণেই ভবিষ্যদ্বাণীটা না মেলার সম্ভাবনা থেকে যায়। আর ভারত যে দলের বিপক্ষে খেলবে, সেটা অস্ট্রেলিয়া বলেই এই কথা আরও বেশি প্রযোজ্য।
দুই দলের শক্তির তুলনা করলে ব্যাটিং ও স্পিন বোলিংয়ে ভারতকে অনেকটাই এগিয়ে রাখতে হবে। পেস বোলিংয়ে মোহাম্মদ শামি খুব ভালো করে গেলেও গত দু-একটি ম্যাচে বাকিদের দেখেছি কিছুটা ধার হারাতে। ওদিকে অস্ট্রেলিয়ার পেসাররা জ্বলে উঠেছে। ফাইনালে হয়তো দুই দলের পেসারদের মধ্যে কে সেরা, সেই যুদ্ধ হবে। তারপরও সব বিবেচনায় এ মুহূর্তে ভারতই ফাইনালে হট ফেবারিট।
ভারত ঘরের মাঠে খেলছে, দেশটির বিশাল এক জনসংখ্যার প্রত্যাশা, ফাইনালকে ঘিরে জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন—সবকিছুতেই একটা অলিখিত বার্তা আছে, ভারতকে জিততেই হবে। এটাই রোহিতদের জন্য চাপ হয়ে যায় কি না, সেটা দেখার বিষয়। স্টেডিয়ামে উপস্থিত বিশাল সমর্থনকে স্তব্ধ করে দেওয়ার চ্যালেঞ্জ কিন্তু অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক ইতিমধ্যেই দিয়ে রেখেছে।
ভারতের ব্যাটিংয়ের ধরন সেমিফাইনালের মতো থাকে কি না, সেটাও দেখতে হবে। রোহিত যে অতি আক্রমণাত্মক শুরুটা করেছিল, সেটা যদি ফাইনালেও থাকে, তাহলে ভারতকে আটকানো প্রায় অসম্ভব হবে। আর এটা ব্যর্থ হলে ভারতের ‘প্ল্যান বি’ কী হতে পারে, তা দেখতে চাইব। অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা নিশ্চয়ই সে সুযোগ দুই হাতে লুফে নিতে চাইবে।
এই দুই দলের লিগ পর্বের ম্যাচটা মনে পড়ছে। সেই ম্যাচের উইকেটে স্পিনাররা রাজত্ব করেছে। আজ শেষ পর্যন্ত কী হয়, তা দেখতে চাইব। বিশ্বকাপ জয়ের এত কাছে এসে ভারত যদি প্রয়োজনের তুলনায় বেশি রোমাঞ্চিত হয়ে যায়, তাহলে তা হিতে বিপরীত হতে পারে। অন্যদিকে অনেকগুলো ফাইনাল খেলার কারণে অস্ট্রেলিয়ার অভিজ্ঞতা এত বেশি, ওরা জানে কীভাবে আবেগে লাগাম টানতে হয়।
তবে ফাইনাল যেহেতু, দুই দলের কেউই হাল ছাড়বে না। দুই দলই টানা জয়ের মধ্যে আছে, তারা ম্যাচের প্রতিটি মুহূর্তে নিজেদের ওপর আস্থা রাখবে, যা ম্যাচটাকেও আকর্ষণীয় করে তুলবে।
দর্শক হিসেবে এই বিশ্বকাপ আমাদের অনেক কিছু দিয়েছে। ওয়ানডে ক্রিকেট যে মরে যায়নি, এবারের বিশ্বকাপ সেটি সামনে নিয়ে এসেছে। ফাইনালেও নিশ্চয়ই একই রোমাঞ্চ থাকবে এবং আশা থাকবে, সেরা দলটার হাতেই শিরোপাটি উঠবে।