প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিদেশিদের ওপর নির্ভর করে চলবে না বাংলাদেশ। প্রত্যেকটা পরিবারকে আত্মনির্ভরশীল হিসেবে গড়ে তুলতে চায় সরকার। আমরা মোবাইল ফোন সবার হাতে পৌঁছে দিয়েছি। প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশটা এগিয়ে যাচ্ছে। এগিয়ে যাবে, সেটাই আমরা চাই। বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুরে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি সরকারের সময় সারের জন্য আন্দোলনরত কৃষকদের গুলি করার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি সরকারের আমলে ১৮ জন কৃষককে গুলি করে মারা হয়েছিল। তাঁদের অপরাধ ছিল, তাঁরা সারের দাবি করেছিলেন। বিদ্যুতের দাবি করায় ৯ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। শ্রমিকেরা ন্যায্য মজুরির আন্দোলন করতে গেলে ১৭ জন শ্রমিককে রমজান মাসে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তখন থেকে আওয়ামী লীগের প্রতিজ্ঞা ছিল কৃষককে সারের পেছনে ছুটতে হবে না, সার কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাবে। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর সেই ব্যবস্থা করেছেন। খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে কৃষকদের প্রণোদনা দেওয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মাঠে কাজ করা ও ফসল ফলানো গৌরবের বিষয়। সেভাবে মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ যেন খাদ্যে কষ্ট না পায়, সেটাই সরকারের লক্ষ্য। উচ্চফলনশীল বিভিন্ন শস্য উৎপাদনে নিবিড় গবেষণায় নিয়মিত অর্থ বরাদ্দ দিয়ে যাচ্ছে সরকার। প্রাকৃতিক বৈরি পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই কৃষি উৎপাদন অব্যাহত রাখতে হবে। এ সময় তিনি ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক উদ্ভাবিত উচ্চফলনশীল ধানের জন্য কৃষিবিদ ও গবেষকদের ধন্যবাদ জানান। আগামী রমজানে এক কোটি মানুষকে টিসিবির পণ্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সরকার খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। এরই মধ্যে আমরা এক কোটি মানুষকে টিসিবির পণ্য দিয়ে আসছি। এ ছাড়া নিম্নবিত্ত ৫০ লাখ মানুষকে ১৫ টাকা কেজিতে চাল দেওয়া হচ্ছে। ২০০৯ সালে আমরা যখন ক্ষমতায় আসি তখন ২৬ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতি ছিল। পরে আমরা ক্ষমতায় এসে কৃষি প্রণোদনার ব্যবস্থা করি। এর আগে বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হেলিকপ্টারে গাজীপুরে অবস্থিত ব্রির ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। পরে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে অনুষ্ঠানে উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা। ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে বঙ্গবন্ধু-পিয়েরে ট্রুডো কৃষি প্রযুক্তি কেন্দ্রের উদ্বোধনও করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে বঙ্গবন্ধু-পিয়েরে ট্রুডো কৃষি প্রযুক্তি কেন্দ্রের উদ্ভাবন পরিদর্শন করেন এবং বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের পাঁচটি প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করেন।