আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বাংলাদেশে আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না। তিনি বলেন, ‘যেহেতু দেশের সর্বোচ্চ আদালত তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতিকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন, সেহেতু দেশে আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না। বর্তমান সরকার যেহেতু আইনের শাসনে বিশ্বাস করে, তাই সর্বোচ্চ আদালতের ওই রায় মান্য করে।’
মন্ত্রী গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ন্যাশনাল স্টেকহোল্ডার কনসালটেশন অন ইনস্টিটিউশনাল অব প্যারালিগ্যাল অ্যাপ্রোচ’ শীর্ষক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ, যেখানে আইনের মাধ্যমে একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। এই নির্বাচন কমিশন জনগণকে সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেবে। এটার জন্য কারও দরজায় গিয়ে তদবিরের দরকার হবে না। বিএনপির নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, সারাবিশ্বে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়। এভাবেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশেও দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। ভোট হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। নির্বাচনের সময় যে সরকার থাকবে, তারা শুধু দৈনন্দিন কাজ করবার জন্যই থাকবে। সেটা আইনের মধ্যেই আছে। আমরা আশা করবো, সবাই নির্বাচনে আসবে।
বিএনপির নেতাকর্মীদের মুক্তির বিষয়ে তিনি বলেন, কেউ যদি বিনা অপরাধে কারাগারে থেকে থাকে, রাজনৈতিক কারণে থেকে থাকে, অবশ্যই মুক্তি পাবে। কিন্তু কেউ যদি মামলার আসামি হিসেবে থেকে থাকে, তাহলে আদালত ছাড়া তার মুক্তি সম্ভব না।
মামলাজট কমাতে সরকার বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সম্প্রতিককালে মামলা বেশি হচ্ছে। মামলাজটের সঠিক পরিসংখ্যান জানতে একটা কমিটি করা হয়েছে। তারা প্রকৃত মামলার পরিমাণ আগামী ১০-১২ দিনের মধ্যে জানাতে পারবে।
অনুষ্ঠানে আইনি সহায়তাকারী বা প্যারালিগ্যাল কর্মীদের কার্যক্রম তুলে ধরা হয়। ২০০৮ সাল থেকে বিভিন্ন এনজিও’র সহায়তায় ৪০টি জেলায় প্যারালিগ্যাল কার্যক্রম শুরু হলেও, বর্তমানে ১০টি জেলায় এ কার্যক্রম রয়েছে। জার্মান দাতা সংস্থা জিআইজেড’র আর্থিক সহায়তা এ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি, ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন, জার্মান রাষ্ট্রদূত আচিম ট্রস্টার, জি আই জেড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর আন্দ্রোস কুক ও রুল অব ল প্রোগ্রামের প্রোগ্রাম হেড প্রমিতাসেন গুপ্তা প্রমুখ বক্তৃতা করেন।