অগ্রবর্তী সময়ের ককপিট
বাংলাদেশ সর্বশেষ

বস্তাভরা ধানের আশায় ‘পরিযায়ী’ তাঁরা

একদলে ২৯ জন। গত বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার দিকে তাঁদের দেখা গেল পাবনার বেড়া বাসস্ট্যান্ডে। তাঁরা ‘পরিযায়ী শ্রমিক’, যাচ্ছেন ধান কাটার জন্য নওগাঁর বদলগাছিতে। তাঁদের সঙ্গে রয়েছে কাস্তে, মাথাল, লেপ-কাঁথা, চাল-ডালসহ সাংসারিক জিনিসপত্র। সবাই মিলে অপেক্ষা করছেন কোনো বাস বা ট্রাকের জন্য। কিন্তু অবরোধের কারণে দীর্ঘ সময় বসে থেকেও তাঁরা বাস বা ট্রাকের দেখা পাচ্ছিলেন না। শেষ পর্যন্ত বিকেলের দিকে একটি ট্রাক ভাড়া করতে সক্ষম হন তাঁরা। আর তাতেই রওনা হন নওগাঁর বদলগাছির উদ্দেশে।

দলনেতা আবু সাঈদ জানান, তাঁদের সবার বাড়ি সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায়। প্রতিবছর আমন ধান কাটার জন্য দল বেঁধে সেখানে যান তাঁরা। এবারও সেখানকার পরিচিত কৃষকেরা মুঠোফোনে কল দিয়েছেন, তাই দল বেঁধে যাচ্ছেন। তাঁদের দলে রয়েছেন মোট ২৯ জন। ২৫ থেকে ৩০ দিন সেখানে থেকে ধান কাটবেন তাঁরা। ধান কেটে পারিশ্রমিক হিসেবে প্রত্যেকে ১৫ থেকে ২০ মণ ধান পাবেন। তবে খাওয়াদাওয়ার দায়িত্ব তাঁদের নিজেদের। এ জন্যই তাঁরা রান্নার সব রকমের সরঞ্জাম নিয়ে যাচ্ছেন।

ধান কাটা শ্রমিকেরা জানান, জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বর্ষা মৌসুমে কৃষিশ্রমিকের হাতে কাজ থাকে না। এমনকি রাজমিস্ত্রির জোগালি, কামলা বা দিনমজুর হিসেবেও এ সময়ে তেমন কোনো কাজ পাওয়া যায় না। ফলে বেড়া, সাঁথিয়াসহ আশপাশের উপজেলায় কর্মসংস্থানের অভাবে অনেকে বেকার হয়ে পড়েন। সংসার চালাতে এ সময় অনেকেই এনজিও থেকে বা দাদনে (সুদে) টাকা নেন। বর্ষার শেষে আমন ধান পাকার সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের চাহিদা ও কদর বেড়ে যায়। শুধু এলাকাতেই নয়, বাইরের জেলাগুলো থেকেও আমন ধান কাটার জন্য তাঁদের ডাক পড়ে। তবে এলাকার চেয়ে অন্য জেলাগুলোয় ধান কাটার পারিশ্রমিক বেশি পাওয়া যায় বলে ধারদেনা করে অনেকেই বাইরের জেলায় যান। সেখানে ২৫ থেকে ৩০ দিন ধান কাটা-মাড়াই করে পারিশ্রমিক হিসেবে পান ১৫ থেকে ২০ মণ ধান। মহাখুশিতে সেই ধান বাড়ি এনে ঋণের টাকা শোধ করেন। এরপর এলাকায় তাঁরা পেঁয়াজসহ অন্যান্য ফসল আবাদে কৃষিশ্রমিক হিসেবে কাজ করেন।

জুয়েল রানা নামের ওই দলের এক শ্রমিক বলেন, ‘আমাগরে এই এলাকায় ধান কাটলি দৈনিক মজুরিতে টাকা দেয়। কিন্তু ওই এলাকায় ধান দেয়। এতে আমাগরে লাভ বেশি হয়। গত বছরেও ১৮ মণ ধান পাইছিল্যাম।’

গতকাল শুক্রবার বেড়া বাসস্ট্যান্ডে দেখা যায়, ১০ জনের আরেকটি ধান কাটা শ্রমিকের দল বগুড়ায় ধান কাটতে যাচ্ছে। ওই দলের দলনেতা রইজউদ্দিন (৫০) জানান, তাঁরা ধান কাটতে যাচ্ছেন বগুড়া জেলার আদমদীঘিতে।

শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় এমনিতেই তাঁদের আর্থিক অবস্থা ভালো না। এর মধ্যে বর্ষা মৌসুমে বেকার হয়ে বসে থাকায় অনেকেই ঋণের জালে আটকা পড়েছেন।

বেড়ার মনজুর কাদের মহিলা কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, বেড়া ও সাঁথিয়ার কয়েক শ শ্রমিক প্রতিবছর ধান কাটতে বিভিন্ন জেলায় যান। একসময় তাঁরা কাজে গেলে বাড়ির সঙ্গে কোনো যোগাযোগের ব্যবস্থা ছিল না। বর্তমানে তাঁরা মুঠোফোন হাতে কাজে যাচ্ছেন।

সম্পর্কিত খবর

তবুও ঢাকা কেন ধীরগতির শহর

Hamid Ramim

গ্রামের বাড়িতেই শেষ জীবন কাটাতে চান প্রধানমন্ত্রী

gmtnews

সনাতনী ও আধুনিক উভয় ওষুধের পাশাপাশি ব্যবহার স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পারে: প্রধানমন্ত্রী

gmtnews

মন্তব্য করুণ

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই অপ্ট আউট করতে পারেন। স্বীকার করুন বিস্তারিত