উত্তর কোরিয়া আবারও ব্যালিস্টিক মিসাইল নিক্ষেপ করেছে বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী। মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) জাপান উপকূলের পানিতে এ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানো হয় বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রধানরা সিউলে উত্তর কোরিয়া ইস্যুতে আলোচনা করেছেন এমন রিপোর্টের মধ্যেই পিয়ংইয়ং এই ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাল। এছাড়া সিউলে এখন অস্ত্র প্রদর্শনীর অনুষ্ঠানও চলছে বলে জানানো হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ জানিয়েছেন, উত্তর কোরিয়ার উপকূলীয় শহর সিনপোর কাছাকাছি এলাকা থেকে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল ১০টা ১৭ মিনিটে একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করা হয়। ওই স্থানটিতে উত্তর কোরিয়ার সাবমেরিন রয়েছে এবং পরীক্ষামূলক ব্যবহারের জন্য সাবমেরিন থেকে নিক্ষেপযোগ্য ব্যালিস্টিক মিসাইলও (এসএলবিএম) রয়েছে।
এদিকে অজ্ঞাত একটি সামরিক সূত্রের বরাত দিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যম জুনগ্যাং ইলবো জানিয়েছে, মঙ্গলবার নিক্ষেপ করা ক্ষেপণাস্ত্রটি সাবমেরিন থেকে নিক্ষেপযোগ্য ব্যালিস্টিক মিসাইল (এসএলবিএম) ছিল বলে ধারণা করছে সিউলের সরকার। তবে এর বেশি আর কিছু জানায়নি ওই সূত্রটি।
উত্তর কোরিয়া অবশ্য উপকূলীয় সিনপো শহরের কাছাকাছি ওই এলাকা থেকে এর আগেও অন্যান্য ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। দক্ষিণ কোরীয় জেসিএস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘আমাদের সামরিক বাহিনী পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। এ বিষয়ে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করছি।’
উল্লেখ্য, চলতি অক্টোবর মাসের শুরুতে বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায় উত্তর কোরিয়া। এর আগে শব্দের চেয়ে দ্রুতগতিসম্পন্ন হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায় দেশটি। এছাড়া গত সেপ্টেম্বর মাসে পৃথকভাবে ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানোরও অভিযোগ ওঠে পিয়ংইয়ংয়ের বিরুদ্ধে।
জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কড়া নিষেধাজ্ঞা ও বিধিনিষেধ সত্ত্বেও একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাচ্ছে উত্তর কোরিয়া। বিধিনিষেধের মধ্যেও পিয়ংইয়ংয়ের অস্ত্র প্রযুক্তি ক্রমেই বাড়ছে। আর ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের সর্বশেষ এই ঘটনার মধ্য দিয়ে এটি পরিষ্কার যে, জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর অবরোধ ও বিধিনিষেধের কারণে উত্তর কোরিয়া তাদের অস্ত্র পরীক্ষা বন্ধ করবে না।
উত্তর কোরিয়ার দূত কিম সং নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সর্বশেষ সাধারণ অধিবেশনে বক্তব্য দেন। তিনি সেখানে বলেন, উত্তরের অস্ত্র ‘উন্নয়ন, পরীক্ষণ, উৎপাদন এবং সংরক্ষণের’ অধিকার আছে। সেসময় তিনি আরও বলেন, তার দেশ ‘নিজেকে রক্ষার উদ্দেশে জাতীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ছে’।