যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, আমরা নতুন করে স্নায়ুযুদ্ধে জড়াতে চাই না। উদ্ভূত চ্যালেঞ্জের শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য যেকোনো দেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত রয়েছে।
নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনের প্রথম দিন দেয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। খবর এএফপি ও সিএনএন’র।
বাইডেন বলেন, আফগান যুদ্ধের সমাপ্তির মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কঠোর কূটনীতির এক নতুন যুগে প্রবেশ করেছে। যদি প্রয়োজন হয়, শক্তি প্রয়োগের প্রস্তুতি নেবে যুক্তরাষ্ট্র। তবে সামরিক শক্তি প্রয়োগ সর্বশেষ উপায় হিসাবে বিবেচিত হবে।
চীনের নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে কয়েক দশক ধরে চলমান অচলাবস্থার মতো বৈশ্বিক দ্বন্দ্বের যুগে ফিরে যেতে চায় না। তবে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিযোগিতা করবে এবং জোরালোভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে।
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্র ও বন্ধুদের পক্ষে দাঁড়াবে। দুর্বল দেশগুলোর ওপর প্রভাব বিস্তারকারী শক্তিশালী দেশগুলোর বলপ্রয়োগের চেষ্টার বিরোধিতা করবে।
বলপ্রয়োগ, অর্থনৈতিক জবরদস্তি এবং বিভ্রান্তির মাধ্যমে অঞ্চলিক ভারসাম্য পরিবর্তনের প্রচেষ্টা চলছে; যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধী কার্যকলাপের উদাহরণ। এ ধরনের প্রচেষ্টাকে আগ্রাসন হিসাবে ব্যাখ্যা করা উচিত।
বাইডেন বলেন, যেহেতু আমরা সামনের দিকে তাকিয়ে আছি। আমরা কোভিড, জলবায়ু পরিবর্তন, শান্তি ও নিরাপত্তা; মানবাধিকার রক্ষা-এসব চ্যালেঞ্জের নেতৃত্ব দিতে চাই। কিন্তু এটা আমরা একা করব না। আমাদের মিত্র এবং অংশীদারদের নিয়েই আমরা সামনে এগিয়ে যাব।
তিনি বলেন, আমরা আর সময় নষ্ট করার সামর্থ্য রাখি না। আসুন কাজ শুরু করি। আসুন এখন আমাদের উন্নত ভবিষ্যৎ তৈরি করি। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর জাতিসংঘে এটি জো বাইডেনের প্রথম ভাষণ।
এদিন সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের দেওয়া ভাষণে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বলেন, বিশ্ব ক্রমেই বিভক্তির দিকে এগোচ্ছে। এর থেকে রেহাই পেতে হলে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনকে সংলাপে বসতে হবে।
তিনি বলেন, বিশ্ব ক্রমেই দুটি ভিন্ন অর্থনীতি, বাণিজ্য, আর্থিক ও প্রযুক্তিগত নিয়মনীতি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উন্নয়নে দুটি স্বতন্ত্র পন্থায় বিভক্ত হয়ে পড়ছে। এমনকি দুটি পৃথক সামরিক ও ভূরাজনৈতিক কৌশলে বিভক্ত হয়ে পড়ছে পৃথিবী।
এটি স্নায়ুযুদ্ধের সময়ের মতো সংকট বয়ে আনবে। তাই বিশ্বাস পুনরুদ্ধার এবং আশা জাগাতে আমাদের মধ্যে সহযোগিতা থাকা দরকার। মহাসচিব বলেন, আমাদের সংলাপ দরকার। বোঝাপড়া দরকার। কারণ দুই শক্তির মধ্যে বিভাজন অগ্রাধিকারমূলক মূল প্রচেষ্টাকে পিছিয়ে দিচ্ছে।