স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, রাজধানী ঢাকাকে কোনোভাবেই অপরিকল্পিতভাবে গড়ে তুলতে দেওয়া হবে না। ড্যাপ চূড়ান্ত করার পর তা বাস্তবায়নে জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, নগর পরিকল্পনাবিদ, আবাসন ব্যবসায়ী ও স্থপতিসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউক’র উদ্যোগে খসড়া বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা-ড্যাপ (২০১৬-২০৩৫) চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে আয়োজিত এক জাতীয় সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে এ কথা জানান।
তাজুল ইসলাম বলেন, ঢাকা শহরকে আমরা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য অবাসযোগ্য নগরীতে রূপান্তর করতে পারি না। সকল আর্থ-সামাজিক শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রয়োজন জীবনযাত্রার উন্নয়ন ও মৌলিক বিষয়গুলো এবারের ড্যাপে অর্ন্তভূক্ত করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে নগর পরিকল্পনাবিদ, স্থপতি, পেশাজীবী, পরিবেশবাদী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার মেয়র এবং কাউন্সিলরসহ সকল পক্ষের সাথে মতবিনিময় করে তাদের পরামর্শ ও মতামত গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এছাড়াও পরিকল্পনা তৈরির সময় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উচ্চপর্যায়ে নীতিমালার পরিকল্পনাগুলো বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। ঢাকাকে আধুনিক, দৃষ্টিনন্দন, বসবাসযোগ্য করতে নানা উদ্যোগের পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব শহর তৈরীর লক্ষ্যে পরিকল্পনায় অনেকগুলি বৃহত্তম, জলকেন্দ্রিক ও ইকো পার্ক, খেলার মাঠ বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণ এবং রিং রোডের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
মন্ত্রী জানান, আমরা কেউ সুউচ্চ ভবনের বিপক্ষে নই। এমনকি আমি ব্যক্তিগতভাবে নিজেও উচূ ভবনের পক্ষে। কিন্তু এটি করার জন্য যেসব সুযোগ-সুবিধা বিশেষ করে ইউটিলিটি সার্ভিস, রাস্তা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্য কেন্দ্র, খেলার মাঠ ও বিনোদন কেন্দ্রসহ অন্যান্য নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করে করতে হবে। পাঁচ-সাত কাঠা জমির উপর উচু ভবন এবং যেগুলো নিয়ে অসামঞ্জস্য রয়েছে সেগুলো নিয়ে রিভিউ করা হবে। আর এই পরিমাণ জায়গাতে কতটুকু ভবন করা যায় সেটা নিয়ে আলোচনা করে ঠিক করা হবে। আমরা শহরটাকে বসবাসের অযোগ্য বানাতে পারি না। তিনি বলেন, যে সব আবাসিক এলাকায় পূর্বেই শিল্প কল-কারখানা গড়ে উঠেছে সেগুলো যদি পরিবেশবান্ধব হয়, জনমানুষের ভোগান্তির কারণ না হয় তাহলে সেই এলাকাকে মিশ্র এলাকা হিসেবে বিবেচনায় নেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, এ সকল এলাকায় অনলাইন ভিত্তিক ব্যবসা-বাণিজ্যকে উৎসাহিত করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, ড্যাপ চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে এই সেমিনারে সকল পক্ষের এবং বিশেষজ্ঞদের মতামত ও পরামর্শগুলো বিবেচনায় নেব এবং যৌক্তিক বিষয়গুলো অবশ্যই অর্ন্তভূক্ত করা হবে। এসব পরামর্শ ও মতামত আমাদেরকে আরো বেশি সমৃদ্ধ করবে এবং কাজ করতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
গাজিপুরের মেয়র বরখাস্ত হওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়রকে দলীয় সিদ্ধান্তের উপর ভিত্তি করে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তিনি মেয়র পদে থাকবেন কি থাকবেন না সেটা আইন পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।