রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের আহ্বানে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে একটি প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়েছে৷ যাতে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পক্ষে জবাবদিহিতা, তাদের উপর চালানো নিপীড়নের বিচার এবং তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের উপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
জেনেভায় মানবাধিকার পরিষদের ৪৭তম অধিবেশনে রোহিঙ্গা বিষয়ক প্রস্তাবটি পাস হয়৷ বাংলাদেশের উদ্যোগে ইসলামিক সম্মেলন সংস্থার (ওআইসি) সব রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ‘রোহিঙ্গা মুসলিম ও মিয়ানমারের অন্যান্য সংখ্যালঘুর মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক প্রস্তাবটি উপস্থাপিত হয়েছিল৷
জেনেভায় জাতিসংঘের বাংলাদেশ মিশন থেকে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়েছে, ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণের পর এই প্রথম কোনো প্রস্তাব কোন ভোটাভুটি ছাড়াই জাতিসংঘে গৃহীত হল। এই প্রস্তাবটিকে বাংলাদেশের জন্য একটি ‘বড় মাইলফলক’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রস্তাবটিতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করা হয়৷
প্রস্তাবটিতে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যৌন অপরাধসহ সব প্রকার নির্যাতন, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত ও দায়ী ব্যক্তিদের জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিচার ব্যবস্থার আওতায় আনা ও তদন্ত প্রক্রিয়া জোরদার করার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়৷ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত এবং আন্তর্জাতিক আদালতে চলমান বিচার প্রক্রিয়াকেও সমর্থন জানানো হয়৷
এ বিষয়ে রাষ্ট্রদূত মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘সব পক্ষকে একমত করানোর জন্য প্রথম থেকেই সব স্থরে সব ধরনের চেষ্টা করেছি। অবশেষে কোনও রাষ্ট্রই এই রেজুলেশনের বিরোধিতা করেনি, যেটি বাংলাদেশের কূটনীতির একটি বড় অর্জন।’
তিনি বলেন, ‘একদিকে আমরা ওআইসি রাষ্ট্রগুলোকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছি, এই রেজুলেশনে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের বাস্তবতা থাকতে হবে। অন্যদিকে পশ্চিমা দেশগুলোকে মানবাধিকারের বিষয়গুলোর সঙ্গে একমত হওয়ার অনুরোধ করেছি।’
রোহিঙ্গা সংকট সমাধান ও তাদের মানবাধিকার সুরক্ষার বিষয়টি জাতিসংঘে আলোচনায় সক্রিয় রাখা এবং রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নিরাপত্তার সাথে দেশে ফেরত পাঠাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান মোস্তাফিজুর রহমান৷
মিয়ানমারে গণহত্যা ও ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হয়ে ২০১৭ সালের পর কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।