ওয়েস্ট ইন্ডিজের কেন্দ্রীয় চুক্তির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন সাবেক দুই অধিনায়ক জেসন হোল্ডার ও নিকোলাস পুরান এবং অলরাউন্ডার কাইল মায়ার্স। পুরুষদের চুক্তির তালিকায় নতুন এসেছেন চারজন—অ্যালিক অ্যাথানাজ, কিসি কার্টি, তেজনারায়ণ চন্দরপল ও গুড়াকেশ মোতি।
গতকাল ২০২৩-২৪ মৌসুমের পুরুষ ও নারীদের কেন্দ্রীয় চুক্তি ঘোষণা করেছে ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ (সিডব্লুআই)। এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, হোল্ডার, পুরান ও মায়ার্স কেন্দ্রীয় চুক্তিতে না থাকলেও এ সময়ের মধ্যে হতে যাওয়া সব আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে তাঁদের বিবেচনা করা যাবে বলে জানিয়েছেন। এ তিনজনের কেউই সর্বশেষ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ছিলেন না, কিন্তু ১৪ ডিসেম্বর শুরু হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজের দলে আছেন সবাই।
তবে ২০ ওভারের বাইরে অন্য দুই সংস্করণে তাঁদের পাওয়ার ব্যাপারে কিছু নিশ্চিত করা হয়নি। তিনজনের মধ্যে সবচেয়ে সমৃদ্ধ ৩২ বছর বয়সী হোল্ডারের টেস্ট ক্যারিয়ার। ক্যারিয়ারে ৬৪টি টেস্টের মধ্যে ৩৭টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নেতৃত্ব দিয়েছেন এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার। ১৩৮টি ওয়ানডের মধ্যে অধিনায়কত্ব করেছেন ৮৬টিতে। এ বছরের জুলাইয়ে ভারতের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্ট খেলেছিলেন তিনি, ওয়ানডে খেলেছিলেন একই মাসের শুরুতে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে।
২৮ বছর বয়সী পুরানের টেস্ট অভিষেক না হলেও দলকে ১৭টি ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। অন্যদিকে ৩১ বছর বয়সী মায়ার্সের টেস্ট অভিষেক ছিল স্মরণীয়। চট্টগ্রামে বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে ২১০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন তিনি, ৩৯৫ রানের লক্ষ্য ছুঁয়ে রেকর্ড জয় পেয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এখন পর্যন্ত ২৮টি ওয়ানডের সঙ্গে ১৮টি টেস্ট খেলেছেন তিনি।
ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক ক্রিকেট লিগ ও ঠাসা সূচির কারণে বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তির প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ার ঘটনা মোটেও নতুন নয়। বরং ওয়েস্ট ইন্ডিজে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে এটি হয়ে আসছে। ২০১০ সালেই ক্রিস গেইল, কাইরন পোলার্ড, ডোয়াইন ব্রাভোরা এমন চুক্তির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে ‘ফ্রিল্যান্স’ ক্রিকেটার হয়ে গিয়েছিলেন। এমনকি গেইল সে সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়কও ছিলেন।
২০২৪ সালের আইপিএলের জন্য মায়ার্স ও পুরান—দুজনকেই ধরে রেখেছে লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস। রাজস্থান রয়্যালস অবশ্য হোল্ডারকে ছেড়ে দিয়েছে, ফলে এ মাসে হতে যাওয়া নিলামে নতুন দল খুঁজবেন তিনি। পুরান এমনিতে দক্ষিণ আফ্রিকার এসএটোয়েন্টি, সংযুক্ত আরব আমিরাতের আইএলটি-টোয়েন্টিতে খেলবেন আইপিএলের পাশাপাশি। একই বছর আবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও আছে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের পুরুষ দলের প্রধান নির্বাচক ডেসমন্ড হেইন্স বলেছেন, ‘তিন সংস্করণেই ব্যস্ততাময় এক বছরের ক্রিকেটের আগে আমরা দুজন প্রধান কোচের সঙ্গে কয়েকবার বিস্তারিত আলোচনা করেছি। জানতে চেয়েছি তাঁরা কোন ব্র্যান্ডের ক্রিকেট খেলতে চান, সে ব্যাপারে। আমরা কোন পথে এগোতে চাই, সে ব্যাপারে আমরা স্বচ্ছ। যাদের কেন্দ্রীয় চুক্তির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তাদের এখানে পাওয়ার প্রত্যাশা করছি; যেহেতু আমরা ঘরের মাটিতে ২০২৪ আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শীর্ষ স্থানের জন্য লড়াই করার উদ্দেশ্যে এগোচ্ছি। অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডে টেস্ট সিরিজ আছে, এর বাইরে ২০২৭ সালের ৫০ ওভারের বিশ্বকাপকে সামনে রেখে আমরা খেলোয়াড়দের একটা নিউক্লিয়াস গড়ে তোলার চেষ্টা করছি।’
২০২৩-২৪ সালের ওয়েস্ট ইন্ডিজের কেন্দ্রীয় চুক্তি
অ্যালিক অ্যাথানেজ, ক্রেইগ ব্রাফেট, কিসি কার্টি, তেজনারায়ণ চন্দরপল, জশুয়া ডা সিলভা, শেই হোপ, আকিল হোসেইন, আলজারি জোসেফ, ব্র্যান্ডন কিং, গুড়াকেশ মোতি, রোভম্যান পাওয়েল, কিমার রোচ, জেইডেন সিলস ও রোমারিও শেফার্ড
বাদ: জেরমাইন ব্ল্যাকউড, এনক্রুমা বোনার, জেসন হোল্ডার, কাইল মায়ার্স, ওবেদ ম্যাকয়, নিকোলাস পুরান, ওডিন স্মিথ ও হেইডেন ওয়ালশ জুনিয়র।
নতুন: অ্যালিক অ্যাথানাজ, কিসি কার্টি, তেজনারায়ণ চন্দরপল ও গুড়াকেশ মোতি।