যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উদ্যোগে আয়োজিত গণতন্ত্রের বৈশ্বিক শীর্ষ সম্মেলনে এবারও আমন্ত্রণ না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘আপনি গণতন্ত্র কাকে শিখাইতে আসছেন? এ দেশের লোক গণতন্ত্রের জন্য জীবন দিয়েছে। ৩০ লাখ লোক গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ন্যায়বিচারের জন্য রক্ত দিয়েছে। আপনি কাকে শেখাতে চাচ্ছেন গণতন্ত্র?’ বুধবার বিকেলে গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ না পাওয়া প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। এর আগে দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ সফরে আসা মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সেলর ডেরেক শোলের সঙ্গে আলোচনা করেন তিনি। সম্মেলনে দাওয়াত না পাওয়া নিয়ে জানতে চাইলে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘এটা আমাদের আলোচনার বিষয় নয়। এ নিয়ে ওরা কিছু বলে নাই। আমেরিকায় তাদের নিয়মে, তারা যাকে ইচ্ছে দাওয়াত দিবে, যাকে ইচ্ছা দাওয়াত দেবে না। অনেকগুলো দেশকে তারা দাওয়াত দেয়, যেগুলোতে গণতন্ত্রের নাম-গন্ধ নেই। সম্মেলনে আমন্ত্রিত দেশের তালিকা নিয়ে সমালোচনা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারা (যুক্তরাষ্ট্র) যাকে ইচ্ছে দেবে। মিসরের মতো দেশ, সেখানে গণতন্ত্র আছে? তারাও দাওয়াত পায়! আপনার মনে রাখা উচিত, বাংলাদেশের গণতন্ত্র দুনিয়ার অন্যান্য যেকোনো দেশের গণতন্ত্রের চেয়ে ভালো।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমেরিকার ৭৭ পারসেন্ট লোক উভয় দলের, ডেমোক্রেট অ্যান্ড রিপাবলিকান, সবাই বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র দুর্বল। তরুণ মার্কিনিরা ভোট দেয় না। আমাদের সেদিক থেকে ৮০ পারসেন্ট লোক ভোট দেয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্র দুনিয়ার অন্যান্য যেকোনো দেশের গণতন্ত্রের চেয়ে ভালো।’ ডেরেক শোলের সঙ্গে বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে ‘বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাসের তথ্য-প্রমাণ’ পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সেলর ডেরেক এইচ শোলের কাছে তুলে ধরা হয়েছে। আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমরা তথ্য–প্রমাণ দিয়েছি। আমরা অগ্নিসন্ত্রাসের কাহিনিগুলো বলেছি। দেখিয়েছি যে দেখেন, নারী কীভাবে অগ্নিদগ্ধ হয়েছে, বাসের ভেতরে ছিল, সেখানে তাকে মেরে ধ্বংস করে দেওয়া হলো। সে কারণে আমরা কোনো সন্ত্রাস চাই না। আমরা কোনো অগ্নিসন্ত্রাস চাই না। আমরা চাই স্মুদ, ফেয়ার, আমাদের একটি স্বচ্ছ নির্বাচনীপ্রক্রিয়া আছে।’ নির্বাচন নিয়ে শোলের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে তেমন আলাপ হয়নি। কারণ, তারা জানেন যে সব দেশের নির্বাচনে কিছু অপরিপক্বতা আছে। তবে আমি নিজে বলতে চেয়েছি নির্বাচন নিয়ে। কারণ, আমরা এত কাজ করেছি, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স তৈরি করেছি, ভোটার তালিকা ভুয়া না হওয়ার বিষয়ে বলতে চেয়েছি, কিন্তু সময় হয় নাই।’
সম্পর্কিত খবর
- মন্তব্য
- ফেসবুক কমেন্টস