দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন বিশ্বজুড়ে অভূতপূর্ব দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এর আগে এতো দ্রুতগতিতে ভাইরাসের অন্য কোনো ভ্যারিয়েন্টকে ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়নি বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।
মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিউএইচও’র মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস এই তথ্য সামনে আনেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদ সম্মেলনে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার শীর্ষ এই সংস্থাটির প্রধান সাংবাদিকদের জানান, নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে শনাক্তের পর ভাইরাসের অতিসংক্রামক এই ধরনটি এখন পর্যন্ত ৭৭টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এর আগে অন্য কোনো ভ্যারিয়েন্টকে এতো দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়নি।
তবে তিনি এটিও বলছেন যে, করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে হয়তো আরও বহু মানুষ আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন, কিন্তু তাদেরকে এখনও শনাক্ত করা হয়নি। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ওমিক্রনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে যথেষ্ট পদক্ষেপ হয়তো নেওয়া হয়নি।
অবশ্য বিদ্যমান পরিস্থিতিতে করোনা বিধিনিষেধ কঠোরভাবে মেনে চলতে বরাবরই পরামর্শ দিয়ে আসছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এমনকি টিকা নেওয়া হলেও এই ভ্যারিয়েন্টে ফের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে বলে সতর্ক করা হয়েছে।
টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস বলছেন, ওমিক্রনকে মৃদু বলে গুরুত্ব দিচ্ছেন না অনেকে। কিন্তু ওমিক্রনে অসুস্থতা যতই কম হোক না কেন, এতো বেশি সংখ্যায় মানুষ আক্রান্ত হতে পারে যাতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধাক্কা খেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ‘ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে মানেই মাস্ক নয়, ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে মানেই সামাজিক দূরত্ব নয়, এমনটি ভাবলে চলবে না। করোনা সংক্রান্ত সকল বিধিনিষেধ সমান ভাবে মেনে চলতে হবে।’
টিকার বুস্টার ডোজ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেক দেশ বুস্টার ডোজ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে, কিন্তু বুস্টার ডোজ দিলেই যে ওমিক্রন থেকে মুক্তি মিলবে এমন প্রমাণ এখনও নেই।
উল্লেখ্য, গত ২৪ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথমবারের মতো ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপরই তা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। করোনার বি.১.১.৫২৯ নামক এই ভ্যারিয়েন্টকে গ্রিক বর্ণমালার ১৫ নম্বর অক্ষর অনুযায়ী ‘ওমিক্রন’ নামকরণ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।