বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে ‘বেলআউট’ –এর কোন প্রস্তাব দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস।
বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নিজ অফিসকক্ষে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বেলআউট চাওয়ার মত কোন পরিস্থিতি বাংলাদেশে তৈরি হয়নি। আমাদের পাঁচ মাসেরও অধিক সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানোর মত পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রা মজুদ আছে।’ তবে ব্যালেন্স অব পেমেন্ট ও বাজেট সহায়তা হিসেবে সংস্থাটির কাছে সহজ শর্তের ঋণ চাওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
আহমদ কায়কাউস বলেন,‘বেলআউট, এই শব্দ নিয়ে আমার চরম আপত্তি। বেলআউট চাওয়া হয়েছে, এমন খবর কোন কোন গণমাধ্যম পরিবেশন করছে। বিষয়টা অত্যন্ত অনভিপ্রেত এবং আত্মসম্মানে লেগেছে।’
তিনি বলেন, বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে ভবিষ্যতে যদি ব্যালেন্স অব পেমেন্টের ঘাটতি বাড়ে, সেজন্যই মূলত অর্থ মন্ত্রণালয় আলোচনা সাপেক্ষে সহায়তা চেয়েছে। এটি সহজ শর্তের ঋণ। বাংলাদেশের ইতিহাসে একাধিকবার এ ধরনের ঋণ সহায়তা আইএমএফ এর কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আরও বলেন, করোনাকালীন বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), জাইকা এবং আইএমএফ সবার কাছ থেকে বাজেট সহায়তা নেওয়া হয়েছে। তখন কেউ সমালোচনা করেনি।
তিনি বলেন, করোনার সময় আইএমএফ এর কাছ থেকে ৭৩২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ব্যালেন্স অব পেমেন্ট সহায়তা নেওয়া হয়েছে, সেটার পরিশোধও শুরু হয়েছে। তাহলে বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে আমরা এ ধরনের ঋণ সহায়তা নিলে, সেটি তো খারাপ কিছু নয়। অপরাধও নয়। আমরা মাথা উচুঁ করে এই ঋণ চাইতে পারি।
আহমদ কায়কাউস এ প্রসঙ্গে বলেন, আইএমএফ এর কাছ থেকে নিয়মিত চার ধরনের তহবিল সহায়তা পাওয়া যায়। আমাদের সঙ্গে প্রতিবছর সেটি নিয়ে আলোচনা হয়। এবারও ব্যালেন্স অব পেমেন্ট ও বাজেট সহায়তার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলায় সেটি ব্যয় করা হবে।
তিনি বলেন, আমাদের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা বাড়ায় এখন প্রকল্প নির্ভর ঋণের পরিবর্তে বাজেট সহায়তা ঋণ পাচ্ছি। এর মানে হচ্ছে, আমাদের পছন্দ মোতাবেক এই টাকা ব্যয় করতে পারব। এটি আমাদের জন্য ভাল। ভারতের আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে যাওয়ার আগেই ভাড়া দিতে হবে বলে কেউ কেউ খবর প্রকাশ করছে উল্লেখ করে, তিনি বলেন, এটি সঠিক নয় । উৎপাদনে যাওয়ার আগে কোন ভাড়া দেওয়া লাগবে না। প্রত্যেকটা বিদ্যুৎকেন্দ্র যতক্ষণ পর্যন্ত উৎপাদনে আসবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা কোন ভাড়া দিব না। বিদ্যুৎকেন্দ্রকে ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি কেবল বাংলাদেশে নয়, বিশ্বব্যাপী এই ব্যবস্থা আছে। বিদ্যুতের ক্ষেত্রে ৬৫ শতাংশ ব্যয় হয় জ্বালানীতে এবং ৩৫ শতাংশ ব্যয় হয় বিনিয়োগজনিত। দেশি-বিদেশী বিনিয়োগের জন্য ক্যাপাসিটি চার্জ রাখার দরকার বলে তিনি মন্তব্য করেন।