পূর্ব ইউরোপের দেশ ইউক্রেনে রাশিয়ার সর্বাত্মক সামরিক অভিযান চলছে। মস্কোর এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে একে একে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যাচ্ছে পশ্চিমারা। সর্বশেষ রাশিয়ার বিমানগুলোর জন্য ইউরোপের আকাশ বন্ধ ঘোষণা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ইউরোপীয়ান কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডার লিয়েন রোববার এই ঘোষণা দেন।
সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। অবশ্য ব্যক্তিগতভাবেও ইউরোপের অনেক দেশ ইতোমধ্যেই রাশিয়ার ফ্লাইটগুলোর জন্য নিজের আকাশসীমা বন্ধ ঘোষণা করেছে।
রোববার ইউরোপীয়ান কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডার লিয়েন বলেন, ‘রাশিয়ার মালিকানাধীন, রুশ নিবদ্ধনকৃত অথবা রুশ নিয়ন্ত্রিত বিমানগুলোর জন্য আমরা ইইউয়ের আকাশসীমা বন্ধ করে দিচ্ছি। এর ফলে রুশ নাগরিকদের ব্যক্তিগত বিমানসহ রাশিয়ার কোনো বিমান ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে অবতরণ, উড্ডয়ন বা আকাশসীমার ভেতর দিয়ে ভ্রমণ করতে পারবে না।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই ঘোষণার আগেই অবশ্য নিজ আকাশসীমা থেকে রুশ বিমান নিষিদ্ধ করেছে যুক্তরাজ্য। পৃথকভাবে একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স, স্পেন ও পর্তুগালের মতো ইউরোপের অনেক দেশই। জার্মানি অবশ্য তিন মাসের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই ঘোষণার পর পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছে রাশিয়ার সবচেয়ে বড় বিমান সংস্থা অ্যারোফ্লট। এয়ারলাইন্সটি জানিয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ইউরোপের সকল গন্তব্যে ফ্লাইট বাতিল করছে তারা।
এছাড়া আপাতত আগামী ১৩ মার্চ পর্যন্ত ইউরোপের বহু গন্তব্যে ফ্লাইট বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে আরেক রুশ বিমান সংস্থা এস৭ এয়ারলাইন্স।
গত বৃহস্পতিবার ভোরে ইউক্রেনে ঢুকে হামলা শুরু করে রাশিয়ান সৈন্যরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে এটিকে অন্যতম বড় হামলার ঘটনা হিসেবে বলা হচ্ছে। ইউএনএইচসিআর বলছে, ইউক্রেনে আনুমানিক এক লাখ ২০ হাজারের বেশি মানুষ ইতোমধ্যে তাদের ঘরবাড়ি ছেড়েছে। পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে ৫০ লাখ পর্যন্ত মানুষ ইউক্রেনে ঘরছাড়া হতে পারে বলে আশঙ্কা সংস্থাটির।
রুশ সেনাদের হামলার মুখে পিছিয়ে নেই ইউক্রেনও। তীব্র আক্রমণের মুখে সক্ষমতা অনুযায়ী পাল্টা প্রতিরোধের চেষ্টাও করছে তারা।