বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেছেন, সরকার ঘোষিত বিভিন্ন অর্থনৈতিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কর্মসংস্থান তৈরির লক্ষ্যে শিল্পায়নের নানা কার্যক্রম হাতে নিচ্ছে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা। কিন্তু এক্ষেত্রে দক্ষ জনশক্তির অভাব বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রোববার রাজাধানীর মতিঝিল ফেডারেশন ভবনে জাতীয় অর্থনৈতিক নীতি ও পরিকল্পনা, ৮ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা, এসডিজি ও ভিশন ২০৪১ অর্জন বিষয়ক এফবিসিসিআইয়ের স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির চেয়ারম্যান এ.কে.এম শামসুদ্দোহা।
মো. জসিম উদ্দিন বলেন, পোশাক কারখানাগুলো ১৫ থেকে ২০ শতাংশ দক্ষ জনশক্তি ঘাটতিতে রয়েছে। ব্যবস্থাপনার নানা পদে বিদেশীদের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে উদ্যোক্তাদের। দেশে উচ্চশিক্ষিত তরুণদের অভাব না থাকলেও শিল্পের প্রয়োজনীয় দক্ষতার অভাব রয়েছে। সরকারের অনেকগুলো কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকলেও, সেসব প্রতিষ্ঠান থেকে কাঙ্খিত মানের শিক্ষার্থী পাওয়া যাচ্ছে না। সরকারে বিভিন্ন অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অবশ্যই দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে মনোযোগ দিতে হবে। তাই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা কারিকুলামকে শিল্পের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে আরও গতিশীল করার আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি।
এলডিসি পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারি সংস্থাগুলোতেও দক্ষ জনবল নিয়োগ দেয়ার আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করতে হবে, উন্নয়নশীল দেশ হবার পরে স্থানীয় শিল্পকে সুরক্ষা দেয়ার জন্য নতুন নতুন কৌশল হাতে নিতে হবে। কিন্তু সেজন্য সরকারি সংস্থাগুলোতে প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবল নেই। তিনি সরকারি সংস্থাগুলোকে নীতি প্রণয়নের আগে বেসরকারি খাতের সঙ্গে আলোচনা করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, কোন প্রকার আলোচনা ছাড়াই সরকারি সংস্থাগুলো নানা ধরনের নীতি প্রণয়ন করে। মাঠ পর্যায়ের বাস্তবতার প্রতিফলন না থাকায় নীতিগুলো বাস্তবায়ন কঠিন বা অসম্ভব হয়ে পড়ে।
বৈঠকে অন্য অলোচকরা বলেন, দেশের শিল্পায়ন মূলত ঢাকা ও চট্টগ্রামে আটকে আছে। শিল্প বিকেন্দ্রীকরণ করতে দেশব্যাপী অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।তবে এ উদ্যোগ সফল করতে হলে টাউনশিপ গড়তে হবে। তারা বলেন, উন্নত রাষ্ট্রগুলোর অর্থনীতিতে এসএমই খাতের অবদান ৮০ শতাংশ পর্যšত হয়ে থাকে। বাংলাদেশে এ হার মাত্র ৬০ শতাংশ। এসএমই খাতের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সরকারি নীতি সহযোগিতা আরো বাড়াতে হবে।
বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, কমিটির ডিরেক্টর ইন চার্জ ড. নাদিয়া বিনতে আমিন, পরিচালক বিজয় কুমার কেজরিওয়াল, মো. নাসের, সৈয়দ আলমাস কবির, মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।