পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন গতকাল বলেছেন, তিনি ভবিষ্যতে দেখতে চান যে, ভারতে যাওয়ার জন্য কোনো ভিসার প্রয়োজন হবে না। কারণ, বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য প্রতিবেশী এই দেশের মানুষ সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছিল।
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে সেক্টর কমান্ডার ফোরাম আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, আমি সেই দিনটি দেখতে চাই যেদিন আমরা দেখতে পাব ভারতে ভ্রমণের জন্য কোনও ভিসার প্রয়োজন হবে না…. কারণ এই দুটি দেশের জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। আমি তাদের মধ্যে কোনো বাধা দেখতে চাই না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রতি ভারতীয় স্বীকৃতিদানের ঐতিহাসিক দিন। কারণ এই স্বীকৃতি সমগ্র বিশ্বের কাছে নিশ্চিত করেছিল যে, এটি ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ নয়, বরং ভারত স্বাধীন বাংলাদেশকে সাহায্য করছে যেটি অন্য কোন দেশ আক্রমণ করেছিল।
ভারতীয় পরামর্শ অনুযায়ী ভুটান প্রথমে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল উল্লেখ করে ড. মোমেন ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জনযুদ্ধে সমর্থন দেয়ার জন্য ভারত ও ভুটানের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ ও ভারত আজ মৈত্রী দিবস উদযাপন করছে। ঐতিহাসিক দিনটিতে ভুটানের পর ১৯৭১ সালে ভারত বাংলাদেশকে সার্বভৌম ও স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
২০২১ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশ ও ভারতের দুই প্রধানমন্ত্রী এই দিনটিকে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী দিবস হিসেবে উদযাপন করার সিদ্ধান্ত নেন। আজ সারা বিশ্বের ১৮টি দেশের রাজধানীতে বাংলাদেশ ও ভারত একযোগে দিবসটি উদযাপন করছে।
তিনি বলেন, ভারতের জনগণ এবং সৈন্যরা আমাদের স্বাধীনতার জন্য তাদের রক্ত উৎসর্গ করেছে … আমরা এই রক্তের সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও গভীরভাবে উদযাপন করতে চাই।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অনন্য। কারণ এই দুই প্রতিবেশী একটি গুলি ছাড়াই আলোচনার মাধ্যমে সকল বড় বিরোধের সমাধান করেছে।
তিনি বলেন, সারা বিশ^কে আমাদের এই অনন্য সম্পর্ক দেখানোর জন্য আমরা বাংলাদেশ ও ভারতীয় মিশনগুলোতে মৈত্রী দিবস উদযাপন করতে চাই।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, আগামী দিনগুলোতে ঢাকা ও নয়াদিল্লী বিদ্যমান ছোটখাটো সমস্যাগুলোর সমাধান করবে। কারণ, দুই প্রতিবেশী এখন তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সুবর্ণ অধ্যায় উপভোগ করছে।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৫০ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্কের বিষয়ে ড. মোমেন আশা প্রকাশ করেন, আগামী ৫০ বছরেও ঢাকা ও নয়াদিল্লীর মধ্যে সম্পর্ক নিরবচ্ছিন্ন থাকবে।
সেক্টর কমান্ডারস্ ফোরামের প্রধান এম নুরুল আলম অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী এবং বাংলাদেশে ভুটানের রাষ্ট্রদূত রিনচেন কুয়েন্টসিল অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন।