অগ্রবর্তী সময়ের ককপিট
বাংলাদেশ সর্বশেষ

বিশৃঙ্খল সড়ক, বেড়েছে যানজট

বিশৃঙ্খল সড়ক, বেড়েছে যানজট

বৈশ্বিক মহামারী প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংকট অনেকটা কাটিয়ে মাস দুয়েক আগেই রাজধানী ঢাকা ফিরেছে চিরচেনা চেহারায়। তবে বেশ কিছুদিন ধরে মহানগরীর সড়কে দেখা যাচ্ছে বিশৃঙ্খলা। তীব্র যানজটে নাকাল হচ্ছেন ঢাকাবাসী। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও সেবা সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতার ফলে যানজট নিরসনে পরিকল্পনা ও মহাপরিকল্পনা কাজে আসছে না। দিনের পর দিন গাড়ির সংখ্যা বাড়তে থাকলেও বাড়েনি সড়ক। ব্যস্ততম সড়কগুলোতে ওয়াসা, তিতাস ও সিটি করপোরেশনের মতো বিভিন্ন সেবা সংস্থার নিত্য খোঁড়াখুঁড়িতে যানজট ছড়িয়ে পড়ছে অলিগলিতেও। চালকরা লাইন-লেন না মেনেই গাড়ি চালাচ্ছে, যেখানে-সেখানে দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা করাচ্ছে। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার জন্য কিছু ক্ষেত্রে আধুনিক সিগন্যাল লাইট বসিয়েও পুলিশ হাতের ঈশারায়ই সিগন্যাল নিয়ন্ত্রণ করায় সড়কে নেই ডিজিটালের ছোঁয়া। এছাড়া শৃঙ্খলাহীন ট্রাফিক ব্যবস্থায় যানজট বৃদ্ধি পেলেও এক শ্রেণির ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্য কিংবা মামলা দায়েরে বেশি আগ্রহ বলে অভিযোগ রয়েছে।

তবে দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, করোনা সংক্রমণজনিত লকডাউন উঠে যাওয়ার পর রাজধানীতে গাড়ির সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। বর্তমানে স্বাভাবিক ধারণক্ষমতার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি গাড়ি ঢাকার সড়কে চলছে। প্রধান ব্যস্ত সড়কে কাটাকাটি বা খোঁড়াখুঁড়ি শুরুতে ট্রাফিক পুলিশকে জানানো হলেও পরবর্তীতে সমন্বয় থাকে না। দিনের পর দিন তাই যানজট নিরসনের দায় ট্রাফিক পুলিশের ঘাড়ে বর্তায়। যদিও দায় সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার। ট্রাফিক পুলিশ সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষার চেষ্টা করলেও ট্রাফিক আইন মানার ক্ষেত্রে অধিকাংশ মানুষ বিশৃঙ্খল। মহানগরীর রাস্তার অবস্থা দ্রুত পরিবর্তন হয় ও চরিত্র বদলায়। এক রাস্তার সিগন্যাল সিস্টেম অন্যদিকের রাস্তায় কাজ করে না। নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সিগন্যাল বাতি জ্বালিয়ে সুষ্ঠুভাবে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণ করা প্রায় সম্ভব।

মহাখালী ট্রাফিক পুলিশের মাঠপর্যায়ের সার্জেন্ট রফিকুল বলেছেন, করোনা সংক্রমণজনিত লকডাউন উঠে যাওয়ার পর রাজধানীতে গাড়ির সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। মূল সড়ক ছাড়াও সংযোগ সড়ক, অলিগলিতেও চলছে হরহামেশা খোঁড়াখুঁড়ি। রয়েছে ফিটনেসবিহীন ও ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, যা ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। অনভিজ্ঞ ও মেয়াদবিহীন লাইসেন্সের চালক সবাই যেন নেমে পড়েছে সড়কে। এসব কারণে প্রসিকিউশন বা মামলার সংখ্যা বাড়ছে।

যাত্রীদের কেউ কেউ মনে করেন, রাস্তাগুলোতে একদিকে গাড়ির যানজট, অন্যদিকে এ স্থবির পরিস্থিতিতে যানবাহন চালকরাও ট্রাফিক পুলিশের নির্দেশনা না মানায় অবস্থা আরো প্রকট হয়ে ওঠেছে। আর নিয়ম মেনে না চলার কারণে সৃষ্ট যানজট মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ। বাস-মিনিবাসগুলোয় যেখানে-সেখানে দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানামা করা হচ্ছে। রাস্তা দখল করেও বসানো হয়েছে অস্থায়ী দোকান। এ ছাড়া প্রাইভেট কার, ট্রাক, ভ্যান ইত্যাদি রাস্তার ওপরই পার্কিং করে রাখা হয়। অনেক ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখছে না পুলিশ। ভুক্তভোগী যাত্রীরা জানান, অনেক সময় ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় বসে থেকে অবশেষে হেঁটেই গন্তব্যে রওয়ানা দেন তারা। সড়কের যানজটের চিত্র দেখে অনেকে আবার বাসায়ও ফিরে যান। কিছু সড়কে বড় উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের জন্য দুর্ভোগে পড়ছেন যাত্রীরা।

ট্রাফিক পুলিশ বলছে, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে গত আট মাসে (জানুয়ারি-আগস্ট) রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে ছয় লাখ ৩৩ হাজার ৫৬২টি মামলা হয়েছে। মামলার বিপরীতে জরিমানা আদায় হয়েছে ১৫২ কোটি ৫৬ লাখ ৭০ হাজার ৩৮৭ টাকা। একই সূত্র মতে, গত তিন বছরে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন ও কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের কাজে বাধা দেয়ায় রাজধানীতে ২০ লাখ ৬৭ হাজার ১৮৫টি যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। জরিমানা আদায় হয়েছে ১৫৮ কোটি ৪৮ লাখ ছয় হাজার ৮০৯ টাকা। কিন্তু কোনো কিছুতেই প্রধান সড়কের শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। কারণ অধিকাংশ চালক ও পথচারী ট্রাফিক আইন মানতে চায় না। ফলে প্রায়ই ঘটছে দুঘর্টনা।

সম্পর্কিত খবর

বিশ্বকাপ যেভাবে সৌদি আরবের পুনর্গঠনের চাবিকাঠি

Shopnamoy Pronoy

এবার কাশ্মীরে নামছে কোবরা কমান্ডোরা

Hamid Ramim

প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সময়োপযোগী কারিকুলাম প্রণয়নের নির্দেশ রাষ্ট্রপতির

gmtnews

মন্তব্য করুণ

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই অপ্ট আউট করতে পারেন। স্বীকার করুন বিস্তারিত