করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছর এইচএসসি সমমানের পরীক্ষা ছাড়া মূল্যায়নকে অটো পাস হিসেবে অভিহিত করে যে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছিল, তা থেকে বেরিয়ে আসতে চায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা বোর্ড। তাই এবার অটো পাসের বিকল্প পদ্ধতি খুঁজছে সরকার।
দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি দিনে দিনে অবনতি হচ্ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি। জাতীয় মূল্যায়ন পরামর্শক কমিটি এ বিষয়ে প্রাথমিকভাবে কিছু বিকল্প পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করছে।
জেএসসি ও এসএসসি এবং সমমানের ফলকে গণনায় নেওয়ার পাশাপাশি অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা এবং এসএসসির ক্ষেত্রে অ্যাসাইনমেন্টের পাশাপাশি জেএসসি পরীক্ষার ফলকে গণনায় নেওয়ার মতো কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এক কথায় এবার ‘অটো পাস’ দিতে চায় না শিক্ষা বোর্ডগুলো।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব গতকাল শনিবার বলেন, ‘এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার বিষয়ে আমরা খুব গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি। কী হবে, সেটি খুব দ্রুতই জানানো হবে।’
ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের দুজন কর্মকর্তা জানান, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে পরীক্ষা নেওয়ার যে পরিকল্পনা করা হয়েছিল সেই পরিস্থিতি এখন আর নেই। এ জন্য ‘জাতীয় মূল্যায়ন পরামর্শক কমিটি’গঠন করে তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।
আরেক কর্মকর্তা বলেন, প্রথমত পরীক্ষা নেওয়া হবে না সেই সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। অর্থাৎ পরীক্ষার পরিকল্পনা এখনো বাদ হয়ে যায়নি। তবে এর সমাধান বের করার জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটির কাছে জানতে চাওয়া হবে। কিন্তু শিক্ষা বোর্ডগুলো ‘অটো পাস’ দিতে চাচ্ছে না। কারণ, এটি শিক্ষার্থীদের মানসিক সমস্যার সৃষ্টি করে।
গত এক বছরের বেশি সময় ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের কারণে ২০২০ সালের এইচএসসি পরীক্ষা এবং অষ্টম ও পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। এইচএসসি সমমানের পরীক্ষা না নিয়ে অষ্টম শ্রেণির সমাপনী ও এসএসসি সমমান পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। আর ২০২০ সালের মাধ্যমিক পর্যায়ের অষ্টম শ্রেণি এবং প্রাথমিক পর্যায়ের পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষার্থীদের পরবর্তী ক্লাসে উত্তীর্ণ করা হয়। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং গণমাধ্যমেই ‘অটো পাস’ হিসেবে প্রচারিত হতে থাকে। সমালোচনার মুখে পড়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
গত বছর নয়টি শিক্ষা বোর্ড থেকে সর্বমোট ১১ লাখ ৪৫ হাজার ৩২৯জন পরীক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষার জন্য নিবন্ধভুক্ত ছিল যাদের শতভাগ পাস করেছিল। অন্যদিকে প্রায় ৮৮ হাজার ৩০২ জন মাদ্রাসা বোর্ড থেকে আলিম পাস এবং ১ লাখ ৩৩ হাজার ৭৪৬ জন কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে পাস করেছিল।