সারা দেশে করোনার রোগী এবং মৃত্যুর সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে তবে সনাক্তকরণের হার বেড়েছে। খুলনা-রংপুর-রাজশাহী বিভাগে সংক্রমণের উচ্চ হার রেকর্ড করা হয়েছে। দেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরনের দাপটের মধ্যে এক সপ্তাহ ব্যবধানে রোগী শনাক্তের সংখ্যা বেশ বেড়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুলেটিনে বলা হয়েছে, আগের (৩০ মে-৫ জুন) থেকে গত (৬ জুন-১২ জুন) সপ্তাহে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২৭ দশমিক ২০ শতাংশ বেড়েছে। যেখানে নমুনা পরীক্ষা বেড়েছে ২.৪৩ শতাংশ। এই সময়ে মৃত্যু বেড়েছে ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ।
উচ্চ সংক্রমণের জায়গাগুলোতে তৈরি হয়েছে চিকিৎসা সংকট। বিষয়টি নিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বলেন, ‘রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য আইসিইউ শয্যা রয়েছে মাত্র ১৮ টি অথচ প্রতিদিন আবেদন পড়ে ৭০ থেকে ৮০টি’।
শনাক্তের হার বেশি লক্ষ্য করা গেছে খুলনা বিভাগে ৩০ দশমিক ৬৪, রংপুর বিভাগে ২৫ এবং রাজশাহী বিভাগে ১৮ দশমিক ২২ শতাংশ। যেখানে ঢাকা বিভাগে সংক্রমণের হার ৮ দশমিক ৬৩ শতাংশ।
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য সম্ভাব্য সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। উচ্চ সংক্রমণের স্থানে চলাচল সীমিত করা হয়েছে’।
জনসাধারণ সরকারের দেয়া বিধিনিষেধ মেনে চললে পরিস্থিতি উন্নতির দিকে যাবে বলে মনে করেন তিনি।
রংপুর বিভাগীয় উপ-পরিচালক বলেন, ‘আমাদের এখানে রোগী সংখ্যা খুব বেশি না হলেও শনাক্তের হার স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি। পরিস্থিতি যাতে আরো অবনতির দিকে না যায়, সেজন্য স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হচ্ছে’।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে খুলনা বিভাগে। এছাড়া ঢাকা বিভাগে ১০ জন, রাজশাহীতে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর বাইরে চট্টগ্রামে ৬ জন, বরিশালে ২ জন, রংপুরে ২ জন ও সিলেটে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনো দেশে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে কি না, তা বোঝার একটি নির্দেশক হলো রোগী শনাক্তের হার। কোনো দেশে টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়।
সেখানে বাংলাদেশের কোন বিভাগে এই মুহূর্তে শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে নেই। সর্বনিম্ন সংক্রমণের হার বরিশাল বিভাগে ৭ দশমিক ৪০ শতাংশ। সেই হিসেবে ১০ শতাংশের নিচে সংক্রমণ রেকর্ড হয়েছে ঢাকা, বরিশাল ও ময়মনসিংহ বিভাগে।