ব্যাটিং ব্যর্থতার প্রথম সেশনের ধারাবাহিকতা থাকলো দ্বিতীয়টিতেও। অল্পতেই অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ।
এরপর বোলিংয়ে দ্রুত উইকেট পেলেও ভয়ঙ্কর কিছু করতে পারেনি তারা।
মিরপুরে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথম ইনিংসে স্রেফ ১০৬ রানে অলআউট হয়ে যায় স্বাগতিকরা। নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ২ উইকেট হারিয়ে ৬৫ রান করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
টস জিতে শুরুতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। কারণ হিসেবে তখন তিনি বলেছিলেন, চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করা কঠিন হবে। বাংলাদেশের জন্য সেটি হয়ে গেল প্রথম ঘণ্টাতেই।
শুরুটা হয় সাদমান ইসলামকে দিয়ে। ইনিংসের স্রেফ দ্বিতীয় ওভারেই ‘অপ্রয়োজনীয়’ এক শট খেলেন তিনি। উইয়ান মুল্ডারের অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের ফুল লেংথের বল তাড়া করে খেলতে যান। ৪ বলে শূন্য রান করা সাদমানের সেই শটের পরিণতি ছিল দ্বিতীয় স্লিপের ক্যাচ।
মুমিনুল হকের ছয় বলের ইনিংস ছিল বেশ ঘটনাবহুল। মুখোমুখি হওয়া তৃতীয় বলে তাকে এলবিডব্লিউয়ের জন্য জোরালো আবেদন করে দক্ষিণ আফ্রিকা। আম্পায়ার তাতে সাড়া দেননি। পরে রিভিউ নিলেও হক আই দেখা যায়নি ইন্টারনেট ডাউন থাকায়। পরের বলেই চার হাঁকান তিনি।
কিন্তু এক বল পরই আউট হয়ে যান মুমিনুল। মুল্ডারের দুর্দান্ত এক বল তার ব্যাট ছুঁয়ে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। অধিনায়ক শান্তও হাল ধরতে পারেননি দলের। মুল্ডারেই বিধ্বস্ত হয় বাংলাদেশ। তার বলে ফ্লিক করতে গিয়ে ৭ বলে ৭ রান করে শান্ত ক্যাচ দেন শর্ট মিড অফে দাঁড়ানো মহারাজের হাতে।
অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম থিতু হওয়ার বার্তা দিয়েও টিকে থাকতে পারেননি। ২০ বলে ১১ রান করে কাগিসো রাবাদার বলে বোল্ড হয়েছেন তিনি। মুশফিককে ফিরিয়েই টেস্ট ক্যারিয়ারের তিনশ উইকেট পূর্ণ হয় রাবাদার। সবচেয়ে কম বল করে এই মাইলফলক ছুঁয়েছেন তিনি।
৪ উইকেট হারিয়ে ফেলাই মধ্যাহ্নভোজের আগে যথেষ্ট ছিল। কিন্তু বাকি এক ঘণ্টায় আরও দুই উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। ১৩ বলে ১ রান করে রাবাদার বলে আউট হন লিটন দাস। গালিতে দাঁড়িয়ে রীতিমতো উড়ে তার ক্যাচটি নেন স্টাবস।
২৭তম ওভারের প্রথম বলে আউট হয়ে যান মেহেদী হাসান মিরাজ। ২৪ বলে ১৩ রান করে তিনি এলবিডব্লিউ হতেই মধ্যাহ্নভোজের বিরতির ঘোষণা দেন আম্পায়াররা। মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগে মাহমুদুল হাসান জয়ই কেবল টিকে ছিলেন, তখন ৮৬ বল খেলে স্রেফ ১৬ রান করেন।
কিন্তু বিরতি থেকে ফেরার পর তিনিও সাজঘরে ফেরেন। ধৈর্যের ইনিংসের ইতি হয় হতাশায়। বিরতি থেকে ফেরার পর কিছুটা হাত খোলার চেষ্টা করেন জয়। কিন্তু খুব বেশিক্ষণ চালিয়ে খেলতে পারেননি তিনি। ড্যান পিটের বলে ব্যাকফুটে গিয়ে খেলতে যান জয়, হয়ে যান বোল্ড। ৯৭ বলে ৩০ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
বাংলাদেশের জন্য শেষ স্বীকৃত ব্যাটার ছিলেন জাকের আলি। কিন্তু পরের ওভারেই তিনি অদ্ভূতুড়ে আউট হন। মহারাজের বলে এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে পুরোপুরি মিস করেন জাকের আলি। সঙ্গে সঙ্গেই স্টাম্প ভাঙেন উইকেটরক্ষক। অভিষেক ইনিংসে ১৫ বলে ২ রান করেন জাকের।
তার বিদায়ের পর বাংলাদেশের একশর আগে অলআউট হয়ে যাওয়ার শঙ্কা জাগে। কিন্তু তাইজুল ইসলাম ও নাঈম হাসানের জুটিতে সেটি হয়নি। ৪৬ বলে ২৬ রান আসে তাদের জুটিতে। ১৬ বলে ৮ রান করে রাবাদার বলে নাঈম ও ৩১ বলে ১৬ রান করে তাইজুল আউট হন মহারাজের বলে।
প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে বিপদে পড়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকাও। ইনিংসের প্রথম ওভারেই এইডেন মার্করামকে বোল্ড করেন হাসান মাহমুদ। এরপর ৪১ রানের জুটি গড়েন ক্রিস্তিয়ান স্টাবস ও টনি ডি জর্জি। ২৭ বলে ২৩ রান করে স্টাবসকে ফিরিয়ে দেন তাইজুল। ৪৭ বলে ১৯ রান করে জর্জি ও ১৯ বলে ৯ রান করে ডেভিড বেডিংহ্যাম অপরাজিত আছেন।