অগ্রবর্তী সময়ের ককপিট
বাংলাদেশ সর্বশেষ

ভরা মৌসুমেও জমেনি ইসলামপুরের পাইকারি কাপড়ের বাজার

দেশের সবচেয়ে বড় পাইকারি কাপড়ের বাজার পুরান ঢাকার ইসলামপুর। বাজারের বার্ষিক ব্যবসার প্রায় ৬০ শতাংশ হয়ে থাকে ঈদ-উল-ফিতরকে কেন্দ্র করে।

বিশাল বাজারের ব্যস্ততা শুরু হয় শবে বরাতের আগের থেকে। কিন্তু চলতি রমজানে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। ছয় রোজা পার হলেও জমে ওঠেনি এই পাইকারি বাজার।

এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। কেউ বললেন, প্রতিবার রোজার আগেই বেচাকেনা শুরু হলেও এবার বেচাকেনা শুরু হয়েছে একটু দেরিতে। আবার কেউ বললেন, সন্তোষজনক নয়। মূলত সার্বিক মূল্যস্ফীতি, ডলার দাম বৃদ্ধিতে আমদানি ব্যয় বাড়া, এলসি খুলতে না পারা, মানুষের হাতে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় ভরা মৌসুমে জমে ওঠেনি কাপড়ের পাইকারি বাজারটি। তবে ব্যবসায়ীদের আশা দু’একদিনের মধ্যেই ক্রেতা সমাগমে জমে উঠবে বাজার।

ব্যবসায়ীরা জানান, রমজান শুরু হওয়ার আগেই যাবতীয় প্রস্তুতি শেষ হয়ে যায় তাদের। রোজার প্রথম দিন থেকেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ক্রেতারা আসতে শুরু করেন। কিন্তু এবার রমজানে ৬দিন পার হলেও দেখা মিলছে না ক্রেতাদের। আর এখন তো মাঝে মাঝে ‘বিসমিল্লাহই’ হয় না। ব্যবসা খুব খারাপ, সামনে ঈদ কিন্তু ক্রেতা নেই। অনেকেই আবার কাপড় অর্ডার করে তা বাতিল করেছে।

রোববার (১৭ মার্চ) দেশের সর্ববৃহৎ কাপড়ের পাইকারি মার্কেট ইসলামপুরের বিক্রমপুর গার্ডেন সিটি, গুলশানআরা সিটি কমপ্লেক্স, চায়না মার্কেট, নবাববাড়ি মার্কেট, ইসলামপুরের হাজি শরফুদ্দিন ম্যানশন, হাজি ইউসুফ ম্যানশন, আমানউল্লাহ কমপ্লেক্স, লতিফ টাওয়ার, এ মাবুদ রাইন টাওয়ার, লায়ন টাওয়ার, মদিনা ভবন, হাজি শামসুদ্দিন ম্যানশন, হালিম প্লাজা, সোনার বাংলা মার্কেটসহ আশপাশের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, বাহারি পোশাকে সুসজ্জিত প্রতিটি দোকান। বছরের অন্যান্য সময়ে যেমন বেচাকেনা থাকে ঠিক এখনও প্রায় একই রকম আছে। দুই একজন পাইকারি ক্রেতা বিভিন্ন দোকানে এসে কাপড়ের দাম শুনছেন। দুই একজন কিনছেনও। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ব্যবসায়ীরা পছন্দসই পোশাক কিনে কার্টন ভরে নিয়ে যাচ্ছেন গন্তব্যে। এ এলাকার সরু রাস্তার দুপাশে পাইকারি দোকানগুলোর বিক্রয়কর্মীরা কাটাচ্ছেন অলস সময়।

দেশে তৈরি পোশাক এবং বিদেশ থেকে আমদানি করা থান কাপড়ের পাইকারি বাজার হিসেবে পরিচিত হলেও এ বাজারে খুচরা কাপড়ের দোকানও রয়েছে। এই মার্কেটে পাওয়া যায় বাহারি রংয়ের থ্রি-পিস, স্যালোয়ার কামিজ, শাড়ি, শার্ট-প্যান্ট, পাঞ্জাবিসহ বিভিন্ন ধরনের পোশাক। পাওয়া যাচ্ছে বিদেশি ব্যান্ডের কাপড়। ফলে যেকোনও উৎসবকে কেন্দ্র করে তাই জমজমাট হয়ে ওঠে এ বাজার। বাজারের মধ্য ভাগটি খুচরা বিক্রেতাদের জন্য বরাদ্দ। ফলে ক্রেতা-বিক্রেতাদের কোলাহলে সব সময় মুখর থাকে বাজারের এই স্থানটি। তবে পাইকারি বাজারের চিত্র পুরোপুরি ভিন্ন। প্রতিবছর ঈদের প্রায় দেড় মাস আগেই ইসলামপুরে বেচাকেনা শুরু হলেও এবার রমজান মাসেও জমে ওঠেনি। সার্বিক মূল্যস্ফীতি আর আমদানি ব্যয় বাড়ায় দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে প্রায় সব পণ্যে। এতে কমেছে বেচাকেনায়।

এ বিষয়ে চায়না মার্কেটের থ্রি পিস ব্যবসায়ী মো. রহিম শেখ বাংলানিউজকে বলেন, এ বছর বেচা কেনা একেবারেই কম। অন্য বছর এ সময় ইসলামপুরের কাপড় বাজারে পা ফেলার জায়গা থাকে না। কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায় বেচাকেনা। কিন্তু এ বছর এখন পর্যন্ত চিত্রটা বিপরীত। কাপড়ের দাম বৃদ্ধি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ঊর্ধ্বগতির প্রভাবে মানুষের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া কিছু খুচরা ব্যবসায়ী মূলধন হারিয়েছেন। ফলে কাপড় বিক্রি কম হচ্ছে।

বিক্রমপুর গার্ডেন সিটি মার্কেটের আল-মিরাজ ট্রেডার্সের মালিক মো: ফিরোজ বাংলানিউজকে বলেন, প্রত্যাশা যে রকম ছিল সে রকম নয়। কোনো দিন বেচাকেনা হচ্ছে আবার কোনো দিন হচ্ছে না। মানুষের কাছে টাকা থাকলেতো মানুষ কেনা কাটা করবে। কাস্টমার কম। যারা গত বছর ৫০০ গজ মাল নিতো এ বছর নিচ্ছে ৩০০ গজ মাল। ডলারের দাম বেশি এলসি খুলতে সমস্যা তাই সূতা, রং ও  কাপড় আমদানি কমেছে। যেসব কাপড় আসছে সেটাও অনেক দাম পড়ে। এর সঙ্গে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি মানুষ এখন খেয়ে বাঁচার চিন্তা করে। জামা-কাপড়ের কথা পরে আসে।

সম্পর্কিত খবর

দুই মাস ‘নিখোঁজ’ থাকা চীনের সেই প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে সরিয়ে দেওয়া হলো

Hamid Ramim

‘দয়া করে মাহমুদউল্লাহকে ওপরে খেলাও’ – ওয়াসিম আকরাম

Shopnamoy Pronoy

৪৮ দিন পর নির্ভয়ে রাতে ঘুমাল গাজাবাসী

Hamid Ramim

মন্তব্য করুণ

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই অপ্ট আউট করতে পারেন। স্বীকার করুন বিস্তারিত