যুক্তরাজ্যের বার্মিংহামের হিলটন মেট্রোপোল হোটেলে এক জমকালো অনুষ্ঠানে আইকেমই ২০২৩ গ্লোবাল অ্যাওয়ার্ডের বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে৷ যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ইন্টারডিসিপ্লিনারি সেন্টার ফর সার্কুলার কেমিক্যাল ইকোনমি (সার্কুলারকেম) প্লাস্টিক আপসাইক্লিং এবং কার্বন ডাই অক্সাইড হ্রাসে অসামান্য গবেষণার জন্য সাসটেইনেবিলিটি বিভাগে এই পুরস্কারটি জিতেছে। বাংলাদেশি বিজ্ঞানী মাজহারুল ইসলাম এই সার্কুলারকেমের একজন সদস্য।
মাজহারুল ইসলাম কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ে জ্যেষ্ঠ গবেষণাবিদ হিসেবে কর্মরত। তাঁর সরাসরি তত্ত্বাবধানে এই সার্কুলারকেম কেন্দ্র দ্বারা তৈরি হয় রাসায়নিক উপায়ে প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহার প্রক্রিয়া।
আইকেমই গ্লোবাল অ্যাওয়ার্ডস রাসায়নিক প্রকৌশল ক্ষেত্রে বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার হিসেবে পরিচিত। বিশ্বব্যাপী রাসায়নিক, জৈব রাসায়নিক এবং প্রক্রিয়া প্রকৌশলে শ্রেষ্ঠত্ব প্রদর্শন করা ব্যক্তি এবং গবেষণা নির্ভর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অথবা শিল্প প্রতিষ্ঠান সমূহকে সম্মানিত করার একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে আইকেমই কাজ করছে ১৯২২ সাল থেকে।
এ বছর ৩০ জন অভিজ্ঞ বিচারকের একটি বিশিষ্ট প্যানেল বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন শিল্প ক্ষেত্র ফার্মাসিউটিক্যালস, এনার্জি, ইন্ডাস্ট্রি প্রজেক্ট, উদ্ভাবনী পণ্য, নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং, তেল ও গ্যাস, প্রক্রিয়া স্বয়ংক্রিয়তা, ডিজিটাল সাস্টেইনাবলিটি এবং পানির সুবিধাসহ ১৯টি বিভাগে পুরস্কৃত নির্বাচিত করে।
মাজহারুল ইসলামের গবেষণাদলটি তাদের উদ্ভাবিত প্রক্রিয়ায় প্লাস্টিককে ভেঙে ছোট উপাদানে রূপান্তর করবে। যা থেকে পুনরায় প্লাস্টিক তৈরি করা যাবে অথবা প্লাস্টিককে সংশ্লেষিত করে জ্বালানি তেলের মতো দরকারি কার্বন-ভিত্তিক পণ্যগুলিতে রূপান্তরিত করা যাবে। এটা প্লাস্টিক বর্জ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে প্রশংসিত হয়েছে। এই প্রচেষ্টাগুলি আরও টেকসই অর্থনীতি তৈরিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর করা মাজহারুল ইসলাম জার্মানির হ্যানোভার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি নিয়েছেন। এরপর তিনি ইউনিভার্সিটি অব সাউথ অস্ট্রেলিয়া, প্যারিসের ইউনিভার্সিটি অব পিয়ারি এন্ড মারি কিউরি, জার্মানির বন বিশ্ববিদ্যালয় এবং যুক্তরাজ্যের বাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার কাজ করেছেন।
মাজহারুল ইসলামের গবেষণার মূল বিষয়বস্তু হলো নবায়নযোগ্য জ্বালানি (গ্রিন এনার্জি), লিথিয়াম ব্যাটারি টেকনোলজি, চক্রাকার প্লাস্টিক অর্থনীতি এবং শিল্প-কারখানার কার্বন ডাইঅক্সাইড হ্রাস। এসব বিষয়ের ওপর তাঁর ৬টি বই এবং ৬০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।