অগ্রবর্তী সময়ের ককপিট
বাংলাদেশ সর্বশেষ

সাফল্য অনেক, রয়েছে প্রশ্নও

বাঙালি মুসলমান মধ্যবিত্ত শ্রেণির অনগ্রসরতা কাটাতে ১৯২৫ সালে কলকাতায় বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ সর্বপ্রথম বাংলা ভাষায় জ্ঞান সাধনা ও সাহিত্যচর্চায় গুরুত্বারোপ করেন। সে ধারাবাহিকতায় ১৯৪৮ সালে ঢাকায় পূর্ব পাকিস্তান সাহিত্য সম্মেলনে একটি একাডেমি গড়ার কথা বলেন তিনি। যার ফলে ভাষা আন্দোলন এবং এ দেশের মুসলিম মধ্যবিত্তের জাগরণ ও আত্মপরিচয় বিকাশের প্রেরণায় ১৯৫৫ সালে ৩ ডিসেম্বর জন্ম হয় বাংলা একাডেমির। আজ প্রতিষ্ঠানটি ৬৭ বছর পূর্ণ করে ৬৮ বছরে পা দিল।

বাংলা একাডেমির মিশন ও ভিশনে বলা হয়েছে, বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির গবেষণা, প্রকাশনা ও অনুবাদের মাধ্যমে প্রযুক্তিগত জ্ঞানভিত্তিক এবং ঐতিহ্যমণ্ডিত উচ্চ বুদ্ধিবৃত্তিক, গবেষণানিষ্ঠ, বিদ্বৎ সমাজ ও ঐতিহ্যমণ্ডিত সংস্কৃতিমনস্ক জাতি গঠন করা।  এই লক্ষ্য কতটা পূরণ হয়েছে– এমন প্রশ্নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক তারিক মনজুর বলেন, বাংলা একাডেমির অর্জন অনেক। বিশেষ করে, বেশকিছু কাজের অভিধান প্রণয়ন করতে পেরেছে। বিভিন্ন সাহিত্যিকের রচনাবলিও প্রকাশ হয়েছে। একসময়ে পরিভাষা প্রণয়ন ও উচ্চতর শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক রচনার কাজ করেছে। ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে বিষয় নির্ধারণ করে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু যেগুলো উল্লেখ করা হলো, সেসব ক্ষেত্রেই বাংলা একাডেমির ব্যর্থতার ছাপও স্পষ্ট।

তিনি আরও বলেন, বানানের ব্যাপারে বাংলা একাডেমিকে দায়িত্ব দেওয়া হলেও কিছু অযোগ্য ব্যক্তির অংশগ্রহণে তা নতুন নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এখনও অনেক গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিকের রচনাসমগ্র প্রকাশ হয়নি। পরিভাষা প্রণয়ন ও পাঠ্যপুস্তক রচনার কাজ থেমে রয়েছে। কোনো কোনো ফেব্রুয়ারি মাসের আলোচনার বিষয় ভাষা-সাহিত্যের জন্য কোনো কাজের বলে মনে হয়নি। অধ্যাপক তারিকের সুপারিশ, প্রকল্পভিত্তিক কাজের বিকল্প নেই। এসব প্রকল্প পরিকল্পনা ও কার্যক্রমে মেধাবী ও দক্ষ লোক নিয়োগ করতে হবে।

শুরুতে বাংলা একাডেমি ছিল সরকারি প্রতিষ্ঠান। ১৯৫৭ সালে ‘দ্য বেঙ্গলি একাডেমি অ্যাক্ট’ গৃহীত হলে এটি সরকারি অর্থে পরিচালিত স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা লাভ করে। বর্তমানে আটটি বিভাগ ও তিনটি উপবিভাগ নিয়ে এটি পরিচালিত হচ্ছে। বাংলা একাডেমির তথ্যমতে, বর্তমানে একাডেমির আওতায় ‘ভাষা, সাহিত্য, পাঠ্য ও পাঠ্য সহায়ক গ্রন্থ প্রণয়ন ও প্রকাশনা’, ‘অনুবাদকর্মের উন্নয়ন: প্রশিক্ষণ ও প্রকাশনা’ এবং ‘গ্রাফিকস ডিজাইন ও কম্পিউটার প্রশিক্ষণ’ শীর্ষক প্রকল্পের কাজ চলমান। এ ছাড়া শুদ্ধভাবে প্রমিত বাংলা ভাষার চর্চা, প্রয়োগ ও বিকাশ’ শীর্ষক প্রকল্প প্রস্তাবিত রয়েছে।
বাংলা একাডেমির সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. মো. হাসান কবীর সমকালকে বলেন, আমাদের বিভিন্ন প্রকল্প চলমান। এগুলোর মাধ্যমে লক্ষ্য উদ্দেশ্য পূরণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। তবে আমাদের বড় সংকট ফান্ডের অপ্রতুলতা। যে বরাদ্দ দেওয়া হয়, তা যথেষ্ট নয়। ফলে অর্থের অভাবে অনেক প্রকল্প চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়া আমাদের জনবল সংকট রয়েছে। জনবল বাড়ানোর প্রক্রিয়া আমরা চালিয়ে যাচ্ছি।

কর্মসূচি
বাংলা একাডেমির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সকালে র‍্যালি নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। বিকেল ৩টায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। এটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কবি সেলিনা হোসেন। আরও থাকবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। একাডেমির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে সন্ধ্যায় হবে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

সম্পর্কিত খবর

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে একমত হতে পারেননি আরব নেতারা

Hamid Ramim

আফগানিস্তানে ৩ দিনে ২৭ শিশু নিহত: ইউনিসেফ

News Editor

মেট্রোরেলে চড়লেই বুঝবেন মানুষ কত খুশি: অর্থমন্ত্রী

gmtnews

মন্তব্য করুণ

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই অপ্ট আউট করতে পারেন। স্বীকার করুন বিস্তারিত