নাটোর জেলায় হালকা প্রকৌশল শিল্পের মালিক শ্রমিকরা প্রতিবছর দেড়শ কোটি টাকার বিভিন্ন কলকারখানার যন্ত্রাংশ তৈরি করছেন। শ্রমিকদের কোনো প্রশিক্ষণ ও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও দেখে শিখে তৈরি করছেন যন্ত্রাংশ।
প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও স্বল্প সুদের ঋণ পেলে এটি একটি সম্ভবনাময় শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। বিসিক ও যুব উন্নয়নের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ ও ব্যাংক ঋণ সহজ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।
নাটোরের বিভিন্ন হালকা শিল্পের ওয়ার্কশপে কর্মরত এই শ্রমিকদের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক নেই। নেই কারিগরি শিক্ষা। ওস্তাদের তালিম ও দেখে শিখে নাটোর চিনিকলসহ মিল কারখানার যন্ত্রপাতি, গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রাংশ, কৃষি যন্ত্রাংশ তেরি করছেন তারা।
বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের শ্রমিক জহুরুল ইসলাম বলেন, এক সময় ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে এসব যন্ত্রাংশ বেশি দামে ক্রয় করা লাগলেও এখানে তৈরি হওয়া যন্ত্রাংশ কম দামে পাচ্ছেন স্থানীয় কল-কারখানার মালিকরা। এছাড়া যন্ত্রাংশ তৈরির জন্য ওয়ার্কশপে কর্মসংস্থান হয়েছে আড়াই হাজার শ্রমিকের। কাজ শিখে গেলেই শ্রমিকরা প্রতি মাসে আয় করছেন ১২ থেকে ১৮ হাজার টাকা।
নাটোর চিনিকলের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক ফরিদ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, নাটোরের হালকা শিল্পের ওয়ার্কশপ থেকে ছোট ছোট যন্ত্রাংশ তৈরি হয়।এদের কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধি করতে পারলে চিনিকলের অনেক যন্ত্রাংশ তারা তৈরি করতে পারবে।
ওয়ার্কশপ মালিক শামীম হোসেন বলেন, ভারি যন্ত্রাংশ তৈরির জন্য তাদের সক্ষমতা থাকলেও তারা মূলধন সংকটের কারণে পিছিয়ে আছে।
বাংলাদেশ ইঞ্জিনিযারিং মালিক সমিতির নাটোর জেলা শাখা যুগ্ম সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, নাটোরে তারা প্রতিবছর প্রায় দেড়শ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ উৎপাদন করলেও প্রতিষ্ঠানগুলো আর্থিক সংকটে রয়েছে। স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণ প্রদান সহ শ্রমিকদের উন্নত প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা করা হলে এটি সম্ভবনাময় শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে বলে দাবি করেন তিনি।
নাটোরের জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভূঁইয়া বলেন, বিসিক ও যুব উন্নয়নের মাধ্যমে শ্রমিকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থার পাশপাশি প্রতিষ্ঠান মালিকদের ব্যাংক ঋণ সহজ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
নাটোর জেলায় ৭টি উপজেলায় প্রায় ৫শ’ হালকা শিল্পের ওয়ার্কশপে এই যন্ত্রাংশ তৈরি হচ্ছে।