আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিলেন অস্ট্রেলিয়া নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মেগ ল্যানিং। ৩১ বয়সী এই ক্রিকেটার গত ফেব্রুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতার পর আর অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলেননি। অপ্রকাশিত চোট সমস্যায় ইংল্যান্ড সফরে খেলেননি।
এরপর ফিট থাকলেও সর্বশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে সিরিজে খেলেননি ল্যানিং। বিগ ব্যাশে মেলবোর্ন স্টার্সেরও নেতৃত্ব দেন ল্যানিং। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়লেও ঘরোয়া ক্রিকেট চালিয়ে যাবেন তিনি।
বিদায়ের ঘোষণা দিয়ে ল্যানিং বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন ছিল। তবে মনে হয়েছে, বিদায় বলার জন্য এটাই সঠিক সময়। ১৩ বছর ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট উপভোগ করতে পেরে আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। কিন্তু আমি জানি, এখনই আমার জন্য নতুন কিছু করার সঠিক সময়। দেশের হয়ে যা অর্জন করতে পেরেছি, তার জন্য আমি গর্বিত এবং সতীর্থদের সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো খুব মিস করব।’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে এর আগে কয়েকবার সাময়িক বিরতিতে গেছেন ল্যানিং। ২০২২ সালে কমনওয়েলথ গেমসে দেশকে সোনার পদক উপহার দেওয়ার পর ব্যক্তিগত কারণে ক্রিকেট থেকে সাময়িকভাবে সরে দাঁড়িয়েছিলেন। গত বছরের ডিসেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার ভারত সফরেও খেলেননি।
২০১০ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রেখেছিলেন ল্যানিং। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ১০৩টি ওয়ানডে, ১২৩টি টি-টোয়েন্টি ও ৬টি টেস্ট খেলেছেন। অধিনায়ক হিসেবে ল্যানিংয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটে আলাদা জায়গাই থাকবে। তিনি অধিনায়ক হিসেবে অস্ট্রেলিয়াকে জিতিয়েছেন পাঁচটি বিশ্বকাপ, সব মিলিয়ে জিতেছেন সাতটি। এর মধ্যে দুটি ওয়ানডে ও পাঁচটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। জিতেছেন কমনওয়েলথ গেমসে সোনার পদকও। ২০১৪ সালে অধিনায়কত্ব পাওয়ার পর থেকে অস্ট্রেলিয়াকে ১৮২ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন ল্যানিং।
মাত্র ১৮ বছর বয়সে শতক করে ছেলে ও মেয়ে মিলিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ানের রেকর্ড গড়েন ল্যানিং। মেয়েদের ওয়ানডে ক্রিকেটে ৪০০০–এর বেশি রান করেছেন ১১ জন। যে তালিকায় সর্বোচ্চ গড় ল্যানিংয়ের। ওয়ানডেতে তাঁর গড় ৫৩.৫১। স্ট্রাইক রেটও চোখে পড়ার মতো—৯২.২০।
মেয়েদের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ল্যানিং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার সফলতম অধিনায়কের রান ৩৪০৫, গড় ৩৬.৬১ , স্ট্রাইক রেট ১১৬.৩৭। শতক আছে দুটি। তবে টেস্ট ক্রিকেট কোনো শতক নেই এই নারী ক্রিকেটারের। ৬ টেস্টের ক্যারিয়ারে আছে মাত্র দুটি ফিফটি।