প্রতিপক্ষ যেমনই হোক, জয় তো জয়ই। বিশ্বকাপে নিজেদের সর্বশেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে হারানোর পর পাকিস্তান হয়তো এভাবেই ভাববে। সে ম্যাচটার আগে পাকিস্তানের বিশ্বকাপ-ভাগ্য নিজেদের হাতে ছিল না। সেদিন ২ পয়েন্ট নিয়ে পাকিস্তান সেমিফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে ফিরেছে। তবে হ্যাঁ, গতকাল নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে আফগানিস্তান জেতায় পাকিস্তানের হিসাবটা কঠিন হয়ে গেছে অনেক। আজ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হারলেই সেমিফাইনালে খেলার আশা শেষ হয়ে যাবে পাকিস্তানের।
প্রতিপক্ষ যেহেতু নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান আত্মবিশ্বাস নিতে পারে অতীত থেকেও। বিশ্বকাপে দুই দলের লড়াইটাই দীর্ঘদিন ধরেই একপেশে, ৯ দেখায় ৭ বারই জিতেছে পাকিস্তান। এবার তো পাকিস্তানের মুখোমুখি হওয়ার আগেই বিরাট বিপদে আছে নিউজিল্যান্ড। বিশ্বকাপের প্রথম চার ম্যাচ জিতে টানা তিনটি ম্যাচ হারায় সেরা চারে কিউইদের জায়গা এখন নড়বড়ে। সঙ্গে চোটের মিছিল তো আছেই। নিয়মিত অধিনায়ক কেইন উইলিয়ামসন চোটে পড়েছেন আগেই।
এরপর চোট আক্রান্তদের তালিকাটা দীর্ঘ করেন মার্ক চ্যাপম্যান, লকি ফার্গুসন, জিমি নিশাম, ম্যাট হেনরি। এত কিছুর মধ্যেও ইতিবাচকতা খুঁজছেন দলটির অলরাউন্ডার ড্যারেল মিচেল। কাল ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ‘আমরা ব্ল্যাক ক্যাপরা যে ধরনের ক্রিকেট খেলি, সেটাই খেলতে চাইব। এভাবে খেলেই আমরা দীর্ঘদিন সাফল্য পেয়ে আসছি।’
পাকিস্তানও আছে নানান ঝামেলায়। বিশ্বকাপের মাঝেই দলটির প্রধান নির্বাচক ইমজামাম-উল-হক পদত্যাগ করেছেন। ক্রিকেট বোর্ড ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্বকাপে দল গঠনের পেছনে স্বার্থের সংঘাত রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখার কথা বলছে। ভারতে বাবরদের রাখা হচ্ছে কঠোর নিরাপত্তাবলয়ে।
বিশ্বকাপ খেলতে আসা অন্যান্য দলের খেলোয়াড়েরা স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াতে পারলেও পাকিস্তানের খেলোয়াড়েরা তা পারছেন না। কাল পাকিস্তানের টিম ডিরেক্টর মিকি আর্থার এমন পরিস্থিতিকে তুলনা করেছেন করোনার সময় জৈব সুরক্ষাবলয়ের সঙ্গে, ‘এটার একটা প্রভাব তো পড়ছেই। সকালে ঘুম ভাঙার পর মনে হচ্ছে সেই একই দিন ঘুরেফিরে আসছে।’
পয়েন্ট তালিকার সমীকরণ, দলটাকে ঘিরে এত বিতর্ক—সবই এই পাকিস্তানকে কোণঠাসা বাঘে পরিণত করতে পারে। আর এমন অবস্থা থেকে পাকিস্তান ঘুরে দাঁড়ালে কী হয়, তা তো ১৯৯২ সালেই ক্রিকেট-বিশ্ব দেখেছে।