অগ্রবর্তী সময়ের ককপিট
বিশ্ব সর্বশেষ

মরক্কোতে ভয়াবহ ভূমিকম্প: নিহত ২ হাজার ছাড়াল

মরক্কোর মধ্যাঞ্চলে আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২ হাজার ছাড়িয়েছে। স্মরণকালের ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে আহত হয়েছেন ২ হাজারের বেশি মানুষ।

দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাতে রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি

বিবিসি বলছে, রিখটার স্কেল ৬ দশমিক ৮ মাত্রার এ ভূমিকম্পে ধ্বংস হয়েছে অসংখ্য বাড়িঘর। বহুলোক রাস্তায় খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছেন। খাদ্য, পানীয়সহ একটু বিশ্রামের অভাবে দিশেহারা হাজার হাজার মানুষ।

মরক্কোর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্যের বরাতে সিএনএন বলছে, ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ২ হাজার ১২ জন। আর আহত হয়েছেন ২ হাজার ৫৯ জন মানুষ। এর মধ্যে ১৪০০ জনেরও বেশি মানুষ গুরুতর আহত হয়েছেন।

হতাহতের সংখ্যা বেশি হয়েছেন মারাক্কেশের দক্ষিণে অবস্থিত প্রদেশগুলোতে। আল-হাউজ, মারাক্কাশ, ওয়ারজাজেট, আজিলাল, চিচাউয়া এবং তারউদান্ত প্রদেশ এবং পৌরসভাগুলিতে হতাহতের সংখ্যা বেশি।

এমন পরিস্থিতিতে রাজা ষষ্ঠ মোহাম্মদ দেশটিতে তিন দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছেন এবং বেঁচে যাওয়াদের আশ্রয়, খাবার ও অন্যান্য সাহায্য দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

স্থানীয় সময় শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টার দিকে ভূকম্পনটি হয়।

ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল উচ্চ এটলাস পর্বতমালায়, মারাক্কাশের ৭১ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে বিশ্ব ঐতিহ্যের মর্যাদা সম্পন্ন একটি শহর, যা পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয়।

রাজধানী রাবাত থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে, একইসঙ্গে কাসাব্লাঙ্কা, আগাদির এবং এসসাউইরাতেও কম্পন অনুভূত হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতত্ত্ব জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানায়, শক্তিশালী ভূকম্পনটির মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৮। কম্পনটির গভীরতা ছিল ১৮ দশমিক পাঁচ কিলোমিটার। ভূমিকম্পটি ২০ সেকেন্ড পর্যন্ত স্থায়ী ছিল।

অবশ্য মরক্কোর জিওফিজিক্যাল সেন্টার জানায়, হাই এটলাসের ইঘিল এলাকায় ৭ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।

এছাড়া ভূমিকম্পটির ১৯ মিনিট পর আবারও ৪ দশমিক ৯ মাত্রার ভূ- কম্পন অনুভূত হয়। দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় বেশ কিছু গ্রাম পুরোপুরি সমতল হয়ে গেছে বলে জানা গেছে।

ভূমিকম্পে ধসে গেছে রাবাত ও মারাক্কাশের বহু বাড়ি। ভূমিকম্পের পর পর সামাজিক মাধ্যমে ধসে যাওয়া বাড়ি, রাস্তার ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।

ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, ভূমিকম্পের ফলে অনেক ভবনের দেয়াল ফেটে গেছে। আতঙ্কে মানুষ বেরিয়ে আসেন রাস্তায়। এসময় চারিদিকে ধোঁয়ার কুণ্ডলী ছড়িয়ে  পড়ে।

মারাক্কাশের বাসিন্দা আব্দেলহক এল আমরানি বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেন, আমি ভবন নড়তে দেখছিলাম। তখন আমি বাইরে বের হয়ে দেখি রাস্তায় অসংখ্য মানুষ। মানুষ আতঙ্কিত ও হতবিহ্বল হয়ে পড়েছিল। শিশুরা কান্নাকাটি করছিল। ভূমিকম্পের পর ১০ মিনিটের জন্য বিদ্যুৎসহ মোবাইল নেটওয়ার্ক চলে গিয়েছিল। বিদ্যুৎ এলেও কেউ আর নিজ ঘরে ফেরেননি।

এদিকে রয়টার্সের প্রতিবেদন বলছে, এ ভূমিকম্পে বেশিরভাগ প্রাণহানি পাহাড়ি এলাকায় হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় এক কর্মকর্তা।

ভূমিকম্পের কেন্দ্রের কাছের পাহাড়ি গ্রামের বাসিন্দা মনতাসির ইত্রি জানান, সেখানকার বেশিরভাগ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের প্রতিবেশীরা ধ্বংসস্তূপের নিচে রয়েছে এবং লোকেরা নিজ নিজ উদ্যোগে তাদের উদ্ধারের জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে।

আরও পশ্চিমে তারউদান্টের কাছের গ্রামের শিক্ষক হামিদ আফকার বলছিলেন যে, ভূকম্পনের সময় তিনি তার বাড়ি থেকে দৌড়ে বেরিয়ে পড়েন। এবং বেশ কয়েকটি ঝাঁকুনি অনুভব করেন।

তিন বলেন, পৃথিবীটি প্রায় ২০ সেকেন্ডের জন্য কেঁপে উঠল। আমি দ্বিতীয়তলা থেকে নিচে নেমে আসার সাথে সাথে দরজা নিজেই খুলে গেল এবং বন্ধ হয়ে গেল।

ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত একটি গ্রাম থেকে বিবিসির রিপোর্টার নিক বেক বলছেন, আফটারশকের আশঙ্কায় অনেক লোক সেখানে রাতের (ঘুমানোর) জন্য ক্যাম্পিং করছে।

৫০০ বছরের মধ্যে উত্তর আফ্রিকার দেশটির ওই এলাকায় এত বড় ভূমিকম্প হয়নি। উত্তর রিফ পর্বতমালার আল হোসেইমার কাছে ২০০৪ সালের ভূমিকম্পের পর থেকে মরক্কোর সবচেয়ে মারাত্মক ভূমিকম্প এটি।

অ্যাটলাস পর্বতমালায় ‘তির্যক-বিপরীত ফল্টিং’ এ ভূমিকম্পের কারণ বলে ব্যাখ্যা করেছে ইউএসজিএস। স্পেন ও পর্তুগালেও কম্পন অনুভূত হয়েছে বলে খবর।

সম্পর্কিত খবর

আম্মান দূতাবাস পরিদর্শনে এনডিসি প্রতিনিধি দল

Zayed Nahin

আফ্রিকা ফুটবলের নতুন রাজা ওসিমেন

Shopnamoy Pronoy

গাজার উপর আবারও ইসরায়েলের হামলা

gmtnews

মন্তব্য করুণ

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই অপ্ট আউট করতে পারেন। স্বীকার করুন বিস্তারিত