গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস এবং ইসলামিক জিহাদ গ্রুপ শনিবার থেকে চলমান যুদ্ধে অন্তত ১৩০ জন ইসরাইলিকে বন্দী করার দাবি করেছে। এছাড়া ইসরাইলের ৭৫০ জন নিখোঁজ রয়েছে।
হামাসের সিনিয়র কর্মকর্তা মুসা আবু মারজুক এবং ইসলামিক জিহাদের প্রধান জিয়াদ আল-নাখাল বলেছেন, ইসরাইলি কারাগারগুলোতে আটক সকল ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি না দেয়া পর্যন্ত তাদের হাতে আটক ইসরাইলিদের মুক্তি দেয়া হবে না।
তারা জানিয়েছেন, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে সৈন্য এবং নারী, শিশু ও প্রবীণসহ বেসামরিক নাগরিক রয়েছে।
গত রোববার হামাস আকস্মিক হামলা শুরু করে ইসরাইলে তারা গাজা থেকে হাজার হাজার রকেট নিক্ষেপ করার পর ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ইসরাইলের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়ে। তারা ইসরাইলের বেশ কয়েকটি ট্যাংক ধ্বংস করে। কয়েকটি সেনা ছাউনিতে ঢুকে পড়ে। তারা রোববারও ইসরাইলের অভ্যন্তরে বেশ কয়েকটি স্থানে লড়াই করেছে বলে দাবি করেছে।
রোববার যুদ্ধের দ্বিতীয় দিন পর্যন্ত ৭০০ ইসরাইলি এবং ৪১৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ইসরাইলে নিহতদের মধ্যে অনেক বিদেশীও রয়েছে। নেপাল দূতাবাস জানিয়েছে, তাদের ১০ নাগরিক নিহত হয়েছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ইউক্রেনের নাগরিকরাও নিহত হয়েছে। হামাসের হামলায় ইসরাইলের ২,১৫৬ জন আহত হয়েছে। এছাড়া ৭৫০ জন নিখোঁজ রয়েছে।
অন্যদিকে নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ৭৮ শিশু এবং ৪০ নারী রয়েছে।
ইসরাইল ইতোমধ্যেই সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু করেছে। যুক্তরাষ্ট্রও ইসরাইলকে সহায়তা করার কথা ঘোষণা করেছে। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ‘দীর্ঘ এবং কঠিন যুদ্ধের’ হুমকি দিয়েছেন। এছাড়া গাজা উপত্যকার কাছাকাছি থাকা সকল ইসরাইলিকে দ্রুত সেখান থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইসরাইল গাজায় স্থল হামলা চালাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গাজায় ইসরাইলি হামলা অব্যাহত রয়েছে। রোববার পর্যন্ত তারা গাজার ৮০০টি টার্গেটে হামলা চালানো দাবি করেছে। হামলায় অর্ধশতাধিক যুদ্ধবিমান অংশ নিচ্ছে।
এদিকে শনিবার সন্ধ্যা থেকেই গাজা উপত্যকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েলের কর্তৃপক্ষ। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর অফিসের এক বিবৃতির বরাত দিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যম খবর প্রকাশ করেছে যে ইসরাইল গাজায় খাবার, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দেবে।
নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে ২০০৭ সাল থেকে মিসর ও ইসরাইল গাজা উপত্যকায় চলাচল ও প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করে আসছে।
গাজার উপরের বিমান চলাচলের পথ ও গাজা উপত্যকা সংলগ্ন উপকূল নিয়ন্ত্রণ করে ইসরায়েল।
গাজা ভূখণ্ডের একদিকে প্রবেশে ও পণ্য চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে ইসরায়েল, অন্য দিকে নিয়ন্ত্রণ করে মিশরের কর্তৃপক্ষ।
সূত্র : আল জাজিরা, সিএনএন, বিবিসি এবং অন্যান্য