কক্সবাজার থেকে ফিরে: শনিবার (১১ নভেম্বর) শেষ বিকেলে সূর্য যখন অস্ত যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, সেসময় কক্সবাজার আইকনিক রেলস্টেশন থেকে ছাড়া হয় উদ্বোধনী ট্রেন। প্রথমবারের মতো কক্সবাজার থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করে ট্রেনটি।
ঘড়ির কাটায় তখন বিকেল ৫টা ৪ মিনিট।
আর ১২ ঘণ্টা সময় নিয়ে ৪৬৯ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে রোববার (১২ নভেম্বর) ভোর ৫টা ৫ মিনিটে রাজধানীর কমলাপুরের ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে দিনের প্রথম ট্রেন হিসেবে প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করে উদ্বোধনীর বিশেষ ট্রেনটি। এ সময় ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার ট্রেনটিকে স্টেশনে স্বাগত জানান।
কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে ট্রেনটি ছাড়া হয়। রামু, ঈদগাহ ও দোহাজারী রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রাবিরতি দেওয়া হয়। এরপর রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছায় ট্রেনটি।
কক্সবাজার থেকে উদ্বোধনী ট্রেনে ১৯টি বগি ও দুইটি ইঞ্জিন আছে। এর মধ্যে চারটি বগি ও একটি ইঞ্জিন চট্টগ্রাম স্টেশনে রেখে ৪৫ মিনিটের যাত্রাবিরতি শেষে রাত ১০টা ৩০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয় ট্রেনটি।
এরপর খুব দ্রুতই প্রায় ১৩০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে লাকসাম রেলওয়ে জংশন স্টেশনে ট্রেনটি রাত ১২টার দিকে পৌঁছায়। কিন্তু এরপর থেকেই গতি কমিয়ে ধীর গতিতে চলে বাকি পথ আসতে সময় নেয় ৫ ঘণ্টা। এর মাঝে ট্রেনটি কুমিল্লা, আশুগঞ্জ, ভৈরব বাজার ও ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রাবিরতি দেয়।
ট্রেনের প্রতিটি বগিতে ভাগ হয়ে ছিলেন বিভিন্ন অঞ্চল থেকে যাওয়া রেলওয়ের কর্মকর্তারা। তারা ওই ট্রেনে চট্টগ্রাম ও ঢাকা ফিরছেন। এছাড়া রাজনৈতিক, গণমাধ্যম ও অন্যান্য শ্রেণী-পেশার যারা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দাওয়াত পেয়েছিলেন, তারা চট্টগ্রাম ও ঢাকায় এ ট্রেনে ফিরে আসেন।
কোরিয়ান কোচের এই ট্রেনে ১৪টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বগি আছে। আসনগুলো অত্যাধুনিক। সুইচের মাধ্যমে চেয়ার হেলানো যায়। পাশেই ফ্যান ও লাইটের আলাদা সুইচ। আসনের সঙ্গে রয়েছে টেবিলের মতো জায়গা। মোবাইল ফোন চার্জ দেওয়ার জন্য আছে আলাদা পয়েন্ট। বগির সঙ্গে থাকা দরজাগুলো স্বয়ংক্রিয়। যদি ঠিকভাবে না লাগানো হয় তবে শব্দ করে জানান দেয়।
এর আগে শনিবার দুপুর ১২ টা ৫৮ মিনিটে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার রেলপথ উদ্বোধনের পর সেই ট্রেনেই রামু রেলওয়ে স্টেশনে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপর ট্রেনটি আবার কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশনে ফেরে।