এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ নিশ্চিত হওয়ার পর এবার হোয়াইটওয়াশের লক্ষ্য নিয়ে আগামীকাল জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ।
ম্যাচটি শুরু হবে সকাল ১১টায়। স্টেডিয়াম থেকে ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে গাজী টিভি ও টি স্পোর্টস চ্যানেল।
প্রথম ম্যাচে প্রতিপক্ষের রান তাড়া করতে নেমে ৪৫ রানেই ৬ উইকেট পতনের পর ম্যাচ হারের শঙ্কায় পড়লেও শেষ পর্যন্ত অবিস্মরণীয়ভাবে ৪ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয় স্বাগতিক বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আফগানিস্তানকে ৮৮ রানে হারিয়ে সিরিজ জয় নিশ্চিত করে টাইগাররা। এবার আফগানদের হোয়াইটওয়াশ করার দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ।
প্রথম ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করা আফগানিস্তানকে ২১৫ রানে গুটিয়ে দেয় বাংলাদেশের বোলাররা। এরপর আফগানদের পেসার ফজল হক ফারুকির বোলিং নৈপুন্যে খাদের কিনারায় পড়ে যায় বাংলাদেশ। টাইগারদের টপ অর্ডারের চার উইকেট নেন ফারুকি।
পরে সপ্তম উইকেটে মেহেদি হাসান মিরাজ এবং আফিফ হোসেনের বীরত্বপূর্ণ রেকর্ড ১৭৪ রানের জুটিতে নিশ্চিত হার থেকে জয়ের স্বাদ নেয় বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ওপেনার লিটন দাসের ১৩৬ ও মুশফিকুর রহিমের ৮৬ রানের সুবাদে ৪ উইকেটে ৩০৬ রানের বড় সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। যা আফগানিস্তানের বিপক্ষে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। এরপর বোলাররা লাইন-লেন্থ বজায় রেখে বল করে জয়ের স্বাদ পায় বাংলাদেশ।
সিরিজটি সুপার লিগের অংশ হওয়ায়, দ্বিপাক্ষিক সিরিজের প্রতিটি পয়েন্টই গুরুত্ব¡পূর্ণ। তাই সিরিজ জয়ের পরও হাল ছাড়ার কোন উপায় নেই বাংলাদেশের। পয়েন্টের জন্য নিজেদের সেরা দিয়ে খেলবে টাইগাররা।
ইতোমধ্যে ১০০ পয়েন্ট অর্জন করেছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ওয়ানডে জয়ের পর আইসিসি সুপার লিগের শীর্ষস্থান দখল করে টাইগাররা। তবে এখনও স্বস্তির নিঃশ^াস নেয়ার সুযোগ নেই বাংলাদেশের। কারন সামনে বেশ কিছু কঠিন সিরিজ আছে। যদিও ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ নিশ্চিত করার পথে বহু দূর এগিয়ে গেছে টাইগাররা। তবে পরের সিরিজগুলোতে হার বড় সমস্যায় ফেলতে পারে বাংলাদেশকে।
তাই বাংলাদেশ জানে, প্রতিটি পয়েন্ট এখন তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ বলেন, ‘যেহেতু সিরিজটি আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগের অংশ, আমরা সবাই জানি যে সিরিজের স্কোরলাইন যাই হোক না কেন, প্রতিটি পয়েন্ট এখন গুরুত্ব¡পূর্ণ। হোয়াইটওয়াশের চেয়ে আমাদের ১০টি পয়েন্ট খুব বেশি দরকার। যা পাবার সুযোগ রয়েছে। নিশ্চিতভাবেই আমরা সেই ১০ পয়েন্ট জিততে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘নিশ্চিন্ত থাকার কোন সুযোগ নেই। স্কোয়াডে কোন পরিবর্তন আনা হবে কি-না সেটা জানে টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে স্কোয়াড যাই হোক না কেন, মূল লক্ষ্য ম্যাচ জয়। আমরা জয় ছাড়া অন্য কিছুই ভাবছি না।’
এছাড়া তৃতীয় ম্যাচের জয় পাকিস্তানকে টপকে আইসিসি ওয়ানডে র্যাংকিংয়ে ষষ্ঠ স্থানে জায়গা করে দিবে বাংলাদেশকে। আর একটি জয় প্রথমবারের মতো আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করতে সহায়তা করবে। এর আগে ২০১৬ সালে প্রথম দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলেছিলো বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান। ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছিলো বাংলাদেশ। তাই এ ম্যাচ থেকে অনেক কিছু অর্জনের সুযোগ আছে টাইগারদের।
ওয়ানডে ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১০ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। এরমধ্যে সাতটিতে জয় পায় বাংলাদেশ। আফগানরা জয় পায় তিনটিতে। জয়-হারের চিত্র বলে দেয় ওয়ানডে ক্রিকেটে কতটা শক্তিশালী দল বাংলাদেশ। এমন কথা আগেই বলেছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ইকবাল। আফগানিস্তান অবশ্য টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের শীর্ষে রয়েছে। কারণ বাংলাদেশের বিপক্ষে ছয় ম্যাচের চারটিতে জিতেছে এবং দু’টিতে হেরেছে আফগানরা।