সুদানের প্রধানমন্ত্রী আব্দাল্লাহ হামদোককে গৃহবন্দি করা হয়েছে। স্থানীয় সময় সোমবার (২৫ অক্টোবর) সামরিক বাহিনীর অজ্ঞাত সদস্যরা প্রথমে তার বাড়ি ঘেরাওয়ে করে। প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও তার গণমাধ্যম বিষয়ক উপদেষ্টা ও দেশটির ক্ষমতাসীন সার্বভৌম পরিষদের সদস্যসহ বেশ কয়েকজন মন্ত্রীকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির ক্ষমতাসীন কাউন্সিলের প্রধান ও সেনা কর্মকর্তা আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণা দিয়েছেন। একই সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সার্বভৌম কাউন্সিল ও সরকার ভেঙে দিয়েছেন তিনি।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীকে গৃহবন্দি করার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসেন সাধারণ মানুষ। সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। অন্যদিকে সুদানে সম্ভাব্য সামরিক অভ্যুত্থানের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
সুদানের প্রধানমন্ত্রী আব্দাল্লাহ হামদোককে গৃহবন্দি করার প্রতিবাদে রাজধানী খারতুমের রাস্তায় নেমে আসেন সাধারণ মানুষ। সড়ক অবরোধ করে ও টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। এসময় অভ্যুত্থানবিরোধী বিভিন্ন স্লোগানও দেন বিক্ষোভকারীরা।
এর আগে স্থানীয় সময় সোমবার গৃহবন্দি হন দেশটির প্রধানমন্ত্রী আব্দাল্লাহ হামদোক। সুদানের সম্প্রচারমাধ্যম আল হাদাথের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, সামরিক বাহিনীর অজ্ঞাত সদস্যরা প্রথমেই তার বাড়ি ঘেরাও করে। প্রধানমন্ত্রীকে গৃহবন্দি করার পরপরই দেশটিতে সামরিক অভ্যুত্থানের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। দেশটির তথ্য মন্ত্রণালয়ের ফেসবুক পেজে এক পোস্টে বলা হয়, শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভের মাধ্যমে অভ্যুত্থান ঠেকাতে দেশটির জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী হামদোক।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী আব্দাল্লাহ হামদোককে গৃহবন্দি করার পাশাপাশি তার গণমাধ্যম বিষয়ক উপদেষ্টা ও সরকারের চার মন্ত্রীকেও গ্রেপ্তার করেছে সেনাসদস্যরা। এদিকে প্রধানমন্ত্রীসহ বেসামরিক নাগরিকদের আটকের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এটিকে গণতন্ত্রের ওপর হামলা উল্লেখ করে অগ্রহণযোগ্য আখ্যা দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন।
এরই মধ্যে রাজধানী খার্তুমে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ইন্টারনেট সেবা। পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে সেনা অভিযান চালিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে সুদানের তথ্য মন্ত্রণালয়। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। রাজধানীতে ঢোকার সব প্রবেশপথও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
২০১৯ সালে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরকে সরিয়ে দেওয়ার পর বেসামরিক প্রসাসনের সাথে ক্ষমতা ভাগাভাগি করে সামরিক বাহিনী। ওই চুক্তির ভিত্তিতেই বিগত দুই বছর ধরে চলেছে সুদান। গেল সেপ্টেম্বরে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বশিরের অনুগত সেনারা অভ্যুত্থানের চেষ্টা চালালেও তারা ব্যর্থ হয়। ওই ঘটনার পর দেশটির সামরিক ও বেসামরিক অংশগুলো বিভক্ত হয়ে পড়ে। উভয় পক্ষের মধ্যে দেখা দেয় আস্থার সংকট।
একটি মন্তব্য করা হয়েছে
[…] সুদানে অভ্যুত্থান, জরুরি অবস্থা জারি […]