বাংলাদেশের উত্তর এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী জেলায় করোনা ভাইরাসে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এখনও ৪০ শতাংশের উপরে। মৃতের সংখ্যাও বাড়ছে সেসব জেলায়।
দেশের সীমান্ত জেলাগুলোর পাশাপাশি অন্যান্য জেলাতেও সংক্রমণের হার বেড়েছে। এখন ঢাকা বিভাগের কয়েকটি জেলায় বেড়েছে সংক্রমণ। তাই ঢাকাকে সুরক্ষিত রাখতে এই বিভাগের সাত জেলায় লকডাউন ঘোষণা করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ি, মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জে এই লকডাউন ৩০ জুন পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
দেশের সঙ্গে ভারতের সীমান্তবর্তী জেলা আছে ৩০টি। এর মধ্যে গত মে মাসে সংক্রমণ বাড়ার প্রবণতা দেখা গেছে ৮ জেলায়। এরমধ্যে অন্যতম ছিল চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, খুলনা, রংপুর।
গত এক সপ্তাহে করোনা পরীক্ষার তথ্য বিশ্লেষণ করে জানা যায়, দেশের প্রায় প্রতিটি জেলায় করোনা পরীক্ষা সামান্য বাড়লেই তাতে রোগী শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে যায়। আবার কোনও কোনও জেলায় কম নমুনা পরীক্ষার বিপরীতেও অধিক রোগী পাওয়া যাচ্ছে।
ঈদের পর দেশে সংক্রমণের ৬৩তম সপ্তাহ (১৬ থেকে ২২ মে) থেকে নতুন রোগী ক্রমে বাড়তে শুরু করে। আর মৃত্যু বাড়তে শুরু করে ৬৫তম সপ্তাহ (৩০ মে-৫ জুন) থেকে। এত দিন প্রতি সপ্তাহে নতুন শনাক্ত ও মৃত্যু বৃদ্ধির হার ৩০ শতাংশের নিচে ছিল। কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে পরিস্থিতি দ্রুতই খারাপ হচ্ছে।
রাজধানী ঢাকায় করোনা শনাক্তের হার নিম্নমুখী থাকলেও তা বেড়েছে শনিবার (১৯ জুন) থেকে। তার আগের দিন করোনা শনাক্ত ছিল ৪৭৩ জন। শনিবার শনাক্ত হয় ১ হাজার ১১৪ জন, রবিবার ৮২২ জন এবং সোমবার শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ২৯৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত হয়েছে সাড়ে চার হাজারেরও বেশি মানুষের। আর মৃত্যুবরণ করেছেন ৭৮ জন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে, ‘আমরা যদি বেশি সংখ্যক রোগীর কথা বিবেচনা করি, তাহলে চট্টগ্রাম জেলায় সংক্রমণের হার বেশি। এর পাশাপাশি কুমিল্লা জেলায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে কম, কিন্তু শতকরা হিসাবে সেখানে শনাক্তের হার অন্য যেকোনও সময়ের চেয়ে বেশি। রাজশাহী এবং খুলনা হচ্ছে এই মুহূর্তে আমাদের উদ্বেগের জায়গা। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে এই পরিস্থিতির আশু কোনও উন্নতি আমরা দেখছি না।’
এক সপ্তাহ আগে পরীক্ষা অনুপাতে শনাক্তের হার ঢাকা জেলায় চার শতাংশ থাকলেও এখন এটি প্রায় ছয় শতাংশ।