ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো: ফরিদুল হক খান বলেছেন, দেশে সম্প্রীতির পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকার সম্ভাব্য সব কিছু করবে।
গতকাল সচিবালয়ে ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর অফিস কক্ষে সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত দেবালয়, মন্দির ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি এবং হতাহতদের পুনর্বাসন বিষয়ে এক বিশেষ আলোচনা সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী এ সময় বলেন, ‘দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে একটি গোষ্ঠী দেশের সম্প্রীতির পরিবেশ নষ্ট করতে তৎপর রয়েছে। এরই অংশ হিসেবে সাম্প্রতিক সময়ে দূর্গাপূজা চলাকালীন বিভিন্ন অজুহাতে হিন্দু সম্প্রদায়ের ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের উপর আক্রমণ করে দেশের সম্প্রীতির পরিবেশ নষ্ট করেছে। এসব জঘন্য কর্মে জড়িত ব্যক্তিদের অনেককেই ইতোমধ্যে আইনের আওতায় আনা হয়েছে এবং দ্রুত এদের বিচারের ব্যবস্থা করা হবে। দেশের সম্প্রীতির পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকার সম্ভাব্য সব কিছু করবে।’
ফরিদুল হক খান বলেন, শারদীয় দূর্গাপূজা এবং তৎপরবর্তী সময় সংগঠিত সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত দেবালয় ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি এবং হতাহতদের পুনর্বাসন করা হবে।
তিনি বলেন, ‘মৌলবাদীদের দ্বারা সংগঠিত পূর্বপরিকল্পিত এই সহিংসতায় হিন্দু ধর্মীয় ব্যক্তিদের মনোবল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মনোবল দ্রুত ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এজন্য সরকারের স্থানীয় প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন,‘উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে যে, বিগত শারদীয় দূর্গাপূজার সময় সংগঠিত সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত মন্দির, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি এবং হতাহতদের তালিকা সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হবে।’
তিনি বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে প্রশাসন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিষয়ে দ্রুত আলোচনা সভার আয়োজন করা হবে। এয়াড়া ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির সাথে মতবিনিময় করা হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলা দ্রুত বিচার আইনে বিচার করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কেন্দ্রীয়ভাবে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের নিয়ে মতবিনিময় বা আন্ত:ধর্মীয় সংলাপের আয়োজন করা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এক ও অভিন্ন শিক্ষা ব্যবস্থা প্রচলনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
সভায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য, বীরেন শিকদার এমপি, মনোরঞ্জন শীল গোপাল এমপি, অসীম কুমার উকিল এমপি, পঙ্কজ দেবনাথ এমপি, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এর দায়িত্বে নিয়োজিত অতিরিক্ত সচিব মো: আব্দুল আউয়াল হাওলাদার, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সংস্থা ও আইন) ও সচিব হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাষ্ট মো: মুনিম হাসান ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সহসভাপতি শৈলন্দনাথ মজুমদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।