বিএনপির উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গাজীপুর থেকে মুক্তিযুদ্ধের সূচনা হয়েছিল। এখানে এসে দেখেন মানুষের কত ঢল। আর আপনারা কয়েকটি জেলা নিয়ে তিন দিন ধরে সেখানে কাঁথা-বালিশ নিয়ে শুয়ে থেকেও লোকসমাগম করতে পারছেন না। সিলেটে মানুষের ঢল নেই, আছে সুরমা নদীর ঢল। আর গাজীপুরে বঙ্গোপসাগরের উত্তাল তরঙ্গ। আজ শনিবার গাজীপুর শহরের ঐতিহাসিক রাজবাড়ি ময়দানে মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বক্তব্যের শেষে মহানগর আওয়ামী লীগের দুই সদস্যের কমিটি ঘোষণা করেন। এতে বর্তমান সভাপতিকে আজমত উল্লা খানকে সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লাহ মণ্ডলকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি বলে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে প্রস্থান নিতে। ক্ষমতার পরিবর্তন হতে হলে নির্বাচন হতে হবে। নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতা পরিবর্তনের সুযোগ নেই। আমাদের নামে কোথাও নালিশ করে লাভ করে হবে না। দুনিয়ার সব দেশে যেভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, আমাদের দেশেও সেভাবেই হবে।’বিএনপি আবারও আগুন-সন্ত্রাস শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘কাঁচপুর ব্রিজে শেখ হাসিনার উদ্বোধনী ফলক পুড়িয়ে ফেলেছে। এসব আগুন-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে খেলা হবে। প্রস্তুত হয়ে যান। ভোট চুরি, দুর্নীতি, লুটপাট, হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে খেলা হবে, খেলা হবে।দেশের উন্নয়ন নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের পদ্মা সেতু হয়ে গেল নিজের টাকায়। এটা এখন বিএনপির মনে বড় জ্বালা। কালো চশমা পরে তারা কিছুই দেখতে পায় না।সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে আর কখনো তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসবে না। শেখ হাসিনার অধীনেই আগামী নির্বাচন হবে। নির্বাচনে না এলে বিএনপির নিজেরই ক্ষতি হবে। গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজের (সিজিএস) সমালোচনা করে কামরুল ইসলাম বলেন, এরা বিভিন্ন দূতাবাসকে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ করে দিচ্ছে। এরা জিয়া-এরশাদের মতো সরকার চায়। কিন্তু সেটা কখনো হবে না। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লা খানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের আরেক সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক। প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লাহ মণ্ডলের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সোবহান গোলাপ, সংসদ সদস্য মেহের আফরোজ চুমকি, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু, সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমি, সংসদ সদস্য মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন সবুজ, সংরক্ষিত মহিলা আসেন সংসদ সদস্য শামসুন নাহার ভূঁইয়া, সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য রোমানা আলীসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও গাজীপুর জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। সম্মেলন উপলক্ষে সকাল থেকে গাজীপুর মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যানার–ফেস্টুন হাতে নেতা-কর্মীরা সম্মেলনস্থলে আসেন। সম্মেলন শুরুর আগেই পূর্ণ হয়ে যায় রাজবাড়ি ময়দান। পরে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং পায়রা উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়।