টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীতে দুই দিনব্যাপী গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে নদীর দুই পাড়ে হাজারো মানুষের ঢল নামে।
নৌকা বাইচকে কেন্দ্র করে গোবিন্দাসীসহ আশপাশের এলাকায় উৎসবের আমেজ ছিল।
মঙ্গলবার ও বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) উপজেলার গোবিন্দাসী গরুর হাটের উত্তর পশ্চিমে যমুনা নদীতে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ দেখতে দুপুর থেকেই বিনোদন পিপাসু হাজারো মানুষের ঢল নামে যমুনার দু’পাড়ে। জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বৃদ্ধ ও শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের কয়েক হাজার মানুষ নৌকাবাইচ দেখতে আসেন। কেউ কেউ ছোট কিংবা বড় নৌকা ভাড়া করে পরিবার পরিজন নিয়ে নদীর বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেন। রং-বেরঙের বাহারি নৌকা, বাদ্যযন্ত্রসহ সব মিলিয়ে যমুনা নদীর গোবিন্দাসী এলাকায় বইছিল উৎসবের আমেজ। যমুনার পাড়ে যেন হাজারো মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়।
জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে সুসজ্জিত নৌকা আর রং-বেরঙের বাহারি পোশাক পড়ে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। গ্রাম বাংলার গান আর বৈঠার ছন্দে মাতিয়ে তুলেছিল যমুনার নদীর ঢেউ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পানির মধ্যে নেমে, নদীর চরসহ বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নিয়ে প্রতিযোগিতা উপভোগ করছেন অনেকে। নৌকায় ঘুরে পরিবার পরিজনকে নিয়ে বাইচ দেখতে আনন্দে উন্মুখ হয়ে উঠেছে গ্রামাঞ্চলের মানুষ। আর এ প্রতিযোগিতা উপলক্ষে নদীর পাড়ে বিভিন্ন ধরনের দোকান বসেছে। নৌকাবাইচে অন্তত ৩০টি নৌকা অংশ নেয়।
গোবিন্দাসী গ্রামের হুমায়ন সিকদার বলেন, নৌকাবাইচকে কেন্দ্র করে আমাদের এলাকায় উৎসব চলছে। দূর-দূরান্তের আত্মীয়রা এসেছে আমাদের এলাকায়। নৌকাবাইচ দেখতে আমার খুব ভালো লাগছে।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন টাঙ্গাইল-২ আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনির। আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও গোবিন্দাসী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দুলাল চকদারের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলাল হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম বাবু প্রমুখ।
ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আহসানুল্লাহ বলেন, নৌকাবাইচে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ রাখতে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। বাইচে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনির বলেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে ও যমুনার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষদের আনন্দ দিতে এ আয়োজন করা হয়েছে। আগামীতে এ নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অব্যাহত থাকবে।