পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে বোমা হামলায় জাতিসংঘের ২ শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও পাঁচ শান্তিরক্ষী। মালির উত্তরাঞ্চলীয় এলাকায় রাস্তার পাশে পুঁতে রাখা ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস বিস্ফোরণে হতাহতের এই ঘটনা ঘটে। বুধবার (৬ জুলাই) এক প্রতিদেনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
মালিতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনটি মাল্টিডাইমেনশনাল ইন্টিগ্রেটেড স্ট্যাবিলাইজেশন মিশন ইন মালি (মিনুজমা) নামে পরিচিত। টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় মিনুজমা’র মুখপাত্র অলিভিয়ের সালগাদো বলেছেন, গত মঙ্গলবার মালির উত্তরাঞ্চলীয় টেসালিট গ্রাম এবং গাও শহরের মধ্যে শান্তিরক্ষীদের ওপর হামলার এই ঘটনাটি ঘটে। এসময় দুই জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী নিহত এবং পাঁচজন গুরুতর আহত হন।
আলজাজিরা বলছে, পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটিতে সম্প্রতি নিরাপত্তাহীনতা বেড়েছে। কারণ দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো আক্রমণ বাড়িয়েছে এবং বহু এলাকা দখল করেছে। গত মাসে মালির মোপ্তি অঞ্চলের দিয়াল্লাসাগৌ, দিয়াওয়েলি এবং ডেসাগৌ গ্রামে ১৩২ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়।
উল্লেখ্য, আফ্রিকা মহাদেশের অন্যতম বৃহৎ দেশ মালি খুবই দরিদ্র। ফ্রান্সের নেতৃত্বে একটি আন্তর্জাতিক বাহিনী গত ৯ বছর ধরে দেশটিকে স্থিতিশীল করার চেষ্টা করলেও অভ্যন্তরীণ সহিংসতা মোকাবিলায় মালি এখনও কার্যত সংগ্রাম করে যাচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে মালিতে শান্তি ফেরানোর দায়িত্ব নেয় জাতিসংঘ। আফ্রিকার এই দেশটিতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনটি ‘মিনুজমা’ নামে পরিচিত। এই মিশনের আওতায় মালিতে হাজারও শান্তিরক্ষী মোতায়েন রয়েছে।
মালির উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে সশস্ত্র গোষ্ঠীদের সহিংসতা ও সংঘাত বন্ধের লক্ষ্যেই কাজ করছেন শান্তিরক্ষীরা। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, দায়িত্বপালন করতে গিয়ে ২০১৩ সাল থেকে দেশটিতে ২৩০ জনের বেশি শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন।
এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে মালিতে বোমা হামলায় জাতিসংঘের সাত শান্তিরক্ষী নিহত হন। সেসময় গুরুতর আহত হন আরও তিন শান্তিরক্ষী। এছাড়া গত বছরের অক্টোবর মাসে সন্ত্রাসীদের হামলায় মালিতে এক শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছিলেন।
একইভাবে গত বছরের এপ্রিলে দেশটির উত্তরাঞ্চলে সন্ত্রাসীদের হামলায় শাদের চার শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছিলেন। এরপর একই বছরের জুন মাসে ওই একই অঞ্চলে গাড়ি বোমা হামলায় আহত হন জাতিসংঘের ১৩ শান্তিরক্ষী।