দশকের পর দশক ধরে গৃহযুদ্ধপীড়িত দেশ আফগানিস্তানে শান্তি ফেরাতে বেইজিংকে জোটবদ্ধভাবে কাজের আহ্বান জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে মস্কো-বেইজিং জোটই এই কাজে নেতৃত্বদানে সক্ষম।
শুক্রবার মধ্য-এশিয়ার দেশ তাজিকিস্তানের রাজধানী দুশনবেতে হয়েছে ইউরোপ ও এশিয়া ভিত্তিক আঞ্চলিক জোট এসসিও’র (শাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেন) সম্মেলন। সেই সম্মেলনে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তব্য দেন জোটের অন্যতম সদস্য রাষ্ট্র রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট।
পুতিন বলেন, ‘আফগানিস্তানের বর্তমান যে পরিস্থিতি, তাতে মস্কো-বেইজিং জোটের কাজ করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। দেশটিতে শান্তি ফিরিয়ে আনা এবং জনজীবনকে স্বাভাবিক খাতে প্রবাহিত করার পাশাপাশি, সন্ত্রাসবাদ নির্মূল ও মাদক চোরাচালন প্রতিরোধে নেতৃত্ব দিতে পারে এই জোট।’
গত ১৫ আগস্ট কাবুল জয়ের পর চলতি মাসের শুরুর দিকে আফগানিস্তানে সরকার গঠন করে তালেবান; কিন্তু সেই সরকারকে এখন পর্যন্ত স্বীকৃতি দেয়নি বিশ্বের কোনো রাষ্ট্র।
উপরন্তু, তালেবান ক্ষমতা নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভে আফগানিস্তানের যে অর্থ জমা ছিল, তা উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে, তালেবান বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে চরম আর্থিক সংকট দেখা দিয়েছে আফগানিস্তানে। দেশটির মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশেরও বেশি মানুষের খাদ্য অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
ইতোমধ্যে আফগানিস্তানে সহায়তা পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে চীন এবং রাশিয়া- উভয় রাষ্ট্র। তাছাড়া, চলতি সপ্তাহে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি এবং করণীয় নির্ধারণে মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছে চীন এবং রাশিয়া।
রাশিয়া অবশ্য বরাবরই এ ব্যাপারে সতর্ক অবস্থানে থেকেছে। দেশটিতে তালেবান বাহিনীকে একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে।
তবে আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান ত্যাগ করে চলে যাওয়ার পর এ অঞ্চলে প্রধান রাজনৈতিক ক্রীড়ানক হয়ে উঠছে রাশিয়া ও চীন।
ইতোমধ্যে আফগানিস্তানে জরুরি আর্থিক, খাদ্য ও টিকা সহায়তা পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে চীন। শুক্রবার এসসিও সম্মেলনে চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং জানিয়েছেন, আফগানিস্তান থেকে সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করা হলে দেশটিকে আরও সহায়তা দেওয়া হবে।