বাংলাদেশ সময় রোববার কোপা আমেরিকার ফাইনালে ব্রাজিলের মাটিতে ব্রাজিলকেই হারানোর কঠিন চ্যালেঞ্জ জিতে ২৮ বছরের অপেক্ষার অবসান হলো আর্জেন্টিনার। অ্যানহেল ডি মারিয়ার দেওয়া গোলে স্বাগতিক ব্রাজিলকে হারিয়ে কোপা আমেরিকার শিরোপা জিতে নেয় আর্জেন্টিনা। ডি মারিয়া প্রথমার্ধের ২২মিনিটের মাথায় গোলটি করেন।
এই ট্রফি আর্জেন্টিনার ২৮ বছরের শিরোপা খরাও দূর করল। টুর্নামেন্টে নিওজে চারটি গোল করে এবং ৫টিতে এসিস্ট করে সেরা খেলোয়াড়ও নির্বাচিত হয়েছেন মেসি। ১৫১টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে অংশ নিয়ে আর্জেন্টিনার হয়ে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ডটিও এখন শোভা পাচ্ছে মেসির নামের পাশে।
উরুগুয়ের রেফারি এস্তেবান ওস্তজিচ যখন ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজিয়ে দিলেন, তখন মাঠে শুয়ে পড়েন মেসি। হাত দিয়ে ঢাকেন মুখমন্ডল। এখন তার পরবর্তী চ্যালেঞ্জ কাতার বিশ কাপের শিরোপা। ১৯৮৬ সালে আর্জেন্টিনাকে প্রথম বিশ্ব কাপের শিরোপা স্বাদ পাইয়ে দিয়েছিলেন সদ্য প্রয়াত কিংবদন্তী দিয়াগো ম্যারাডোনা।
আজকের আগে আর্জেন্টিনার হয়ে মেসির সেরা অর্জন ছিল অনুর্ধ-২০ বিশ কাপের শিরোপা এবং অলিম্পিকের স্বর্নপদক। আর্জেন্টিনার হয়ে ২০০৫ সালে যুব বিশ্ব কাপ ও ২০০৮ সালে বেইজিং অলিম্পিকের স্বর্ন জিতেছিলেন তিনি।
সিনিয়র দলের হয়ে মেসিকে প্রথম হতাশায় ভর করে ২০০৬ সালে। জার্মানির কাছে হেরে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিতে হয় আর্জেন্টিনাকে, সেই সঙ্গে ১৯ বছর বয়সি মেসিকেও। এক বছর পর কোপা আমেরিকার ফাইনালে চির প্রতিদ্বন্দ্বি ব্রাজিল ৩-০ গোলে হারায় আর্জেন্টিনাকে।
মেসিকে পরবর্তীতে সবচেয়ে বেশী হতাশ করেছে ২০১৪ বিশ্ব কাপে। ব্রাজিলের মারাকানায় অনুষ্ঠিত ফাইনালে তারা ১-০ গোলে পরাজিত হয় জার্মানির কাছে। ওই সময় অবশ্য ভোটে টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার পেয়েছিলেন মেসি। যদিও বিশ্ব মঞ্চে ক্লাবের মত ফর্ম দেখাতে ব্যর্থ হয়েছিলেন মেসি।
২০১৫ ও ২০১৬ সালের কোপা আমেরিকার ফাইনালে উঠেও মেসির দলকে শিরোপা জিততে দেয়নি চিলি। দুইবারই টাইব্রেকারে হেরেছে আর্জেন্টিনা। চিলির কাছে দ্বিতীয় দফায় পরাজয়ের পর মেসি সাংবাদিকদের বলেন যে তার জাতীয় দলের হয়ে খেলা শেষ হয়ে গেছে। তিনি বলেন, এটি আমার জন্য নয়, আমি চেস্টা করেছি। মনে হয় এটিই বাস্তবতা।’
কিন্তু ধুকতে থাকা আর্জেন্টিনা দলে তিনি আবার ফিরে আসেন দক্ষিন আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে রাশিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। কিন্তু শেষ ষোলতে ফ্রান্সের কাছে হেরে বিশ্ব মঞ্চ থেকে বিদায় নিতে হয় আর্জেন্টিনাকে।
শেষ পর্যন্ত আজ ৩৪ বছর বয়সে কোপা ট্রফিতে চুমো দেয়ার মাধ্যমে জাতীয় দলের জার্সি পড়ে বড় টুর্নামেন্টের শিরোপা জয়ের স্বপ্ন পুরণ করলেন মেসি। এর মাধ্যমে বর্নিল ক্যারিয়ারের অপুর্নতাটুকুও অনেকাংশে পুর্ন হল মেসির।