১৯৭১ সালের যেখান থেকে নবীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র যাত্রা শুরু করেছিল, বিশ্বব্যবস্থা তার চেয়ে এখন অনেক জটিল। রাষ্ট্র হিসেবে এর অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হলে প্রয়োজন নানা ক্ষেত্রে অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন ভাবনা, উদ্ভাবনী পরিকল্পনা, দুঃসাহসী উদ্যোগ। একটি বিজয়ী বাংলাদেশের স্বপ্ন এই ক্রোড়পত্রের লক্ষ্য। এতে পরিবেশন করা হলো ভবিষ্যৎমুখী বাংলাদেশের জন্য কিছু ভাবনা।
কৃষকবান্ধব নীতি প্রণয়ন, গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশে কৃষি খাতে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জিত হয়েছে। খাদ্যে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণতার পরের লক্ষ্যই হচ্ছে কৃষিকে আধুনিকায়ন করে কৃষিপণ্যের রপ্তানি বহুমুখীকরণ ও বৈদেশিক মুদ্রা আহরণ করা। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে নানান কৃষিপণ্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে।
বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্যানুসারে, উল্লেখযোগ্য কৃষিজাত রপ্তানিপণ্য হলো পাট ও পাটজাত দ্রব্য, সুগন্ধি চাল, শাকসবজি, ফলমূল, নানা রকম মসলা, তামাক, ড্রাই ফুডস প্রভৃতি। গত অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) এসব কৃষিপণ্যের রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৯৫৮ মিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশে কৃষিপণ্যের রপ্তানির একটা বড় অংশ জুড়ে ছিল সুগন্ধি চাল। বাংলাদেশের কৃষিপণ্য রপ্তানির প্রধান গন্তব্য হলো ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মধ্যপ্রাচ্য ও উপসাগরীয় অঞ্চল। এসব দেশে বসবাসকারী বাংলাদেশি ও অন্যান্য দক্ষিণ এশীয় প্রবাসীরা হচ্ছেন মূল ভোক্তা।
আমদানি-রপ্তানি পণ্য বৈচিত্র্যকরণে কৃষিপণ্যের রয়েছে বিশাল সম্ভাবনা। বিদেশে বাংলাদেশি কৃষিপণ্যের রয়েছে প্রচুর চাহিদাও। প্রযুক্তির আধুনিকায়ন ও মানসম্মত পণ্য উৎপাদন নিশ্চিত করার ফলে বাংলাদেশের দ্রুত অগ্রগতি হচ্ছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্যমতে, ১২ বছর আগেও কৃষিপণ্যের রপ্তানি আয় ছিল মাত্র ৪০ কোটি ডলার। কিছু ব্যতিক্রম বিবেচনায় না নিলে গত ছয় বছর খাতটির রপ্তানি আয় দ্রুত বাড়ছে। বিগত সময়ে বাংলাদেশ থেকে যে ১০০ কোটি ডলারের কৃষিপণ্য রপ্তানি হয়েছে, তার মধ্যে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের অংশই বেশি।
পৃথিবীর অনেক দেশেই যথেষ্ট পরিমাণে প্রক্রিয়াজাত খাদ্য উৎপাদিত হয় না এবং তারা মূলত আমদানিনির্ভর। তাই আগামী দিনে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের চাহিদা আরও বাড়বে। এ কারণে কৃষিপণ্য রপ্তানি বাড়াতে হলে আমাদের দেশের কৃষিকে আরও বেশি উৎপাদনমুখী ও রপ্তানি বহুমুখীকরণ হতে হবে।