অগ্রবর্তী সময়ের ককপিট
ক্রিকেট খেলা বাংলাদেশ বিনোদন বিশ্ব সর্বশেষ

বিশ্বকাপ দর্শনের একটি অস্বাভাবিক অভিজ্ঞতা

রিসেপশনে দাঁড়িয়ে নাম বলতেই কাউন্টারের ওপারের চারজন এমন ব্যস্তসমস্ত হয়ে উঠলেন যে একটু অবাকই হলাম। ঘটনা কী? ভাবসাব দেখে তো মনে হচ্ছে আমি কখন আসব, এ জন্য অধীর অপেক্ষায় ছিলেন হোটেলের সবাই।

কারণটা দ্রুতই বুঝতে পারলাম। চর্মচক্ষে দেখার আগে আমাকে যে রহস্যময় এক চরিত্র বলে মনে হচ্ছিল তাঁদের! কেউ এভাবে ক্রমাগত চেক ইনের তারিখ বদলাতে থাকলে এমন মনে হওয়াটা মোটেই অস্বাভাবিক নয়। ২ তারিখে যে বোর্ডারের আসার কথা, এক দিন-এক দিন করে তারিখ পেছাতে পেছাতে শেষ পর্যন্ত সে কিনা এল ৭ তারিখে! একটু অবাক তো হওয়ারই কথা। রুম বুঝিয়ে দেওয়ার সময় হোটেলের ম্যানেজার তা বললেনও, ‌‘আমরা তো আপনাকে ফোন দিয়ে বুঝতে চাইছিলাম, ব্যাপারটা কী!’

ব্যাপারটা বুঝিয়ে বলা হলো। যদিও মুখ দেখে মনে হলো না যে তিনি তা বিশ্বাস করেছেন। বিশ্বকাপ কাভার করতে আসা সাংবাদিকেরও ভিসা পেতে এত সময় লাগে নাকি! অনলাইনে অনেক গবেষণা করে এই হোটেলটা বুকিং দেওয়ার সময় চেক ইনের তারিখ ২ অক্টোবর দেওয়ার কারণটা এবার বলি। ক্রিকেটারদের যেমন কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ব্যাপার থাকে, সাংবাদিকেরাও এর ব্যতিক্রম নন। নিজের কথা যদি বলি, বড় ট্যুরের প্রথম এক-দুই দিন একটু দুলকি চালে চলে ধাতস্থ হয়ে নেওয়াটাকে খুব জরুরি বলেই মেনে এসেছি সব সময়। যে দু–একবার পারিনি, সেটির জের টানতে হয়েছে পুরো ট্যুরেই।

আর বড় ট্যুরের কথা যদি বলেন, ৫০ ওভারের বিশ্বকাপের চেয়ে বড় ট্যুর আর হয় নাকি! মাস দেড়েকের কমে শেষই হয় না। এই শহর থেকে ওই শহরে দৌড়াদৌড়ি, তার মধ্যেও প্রতিদিন লেখা (এখন ভিডিও-ও) পাঠানো, ডেটলাইনের সঙ্গে নিত্য লড়াই—বিশ্বকাপ ক্রিকেট সাংবাদিকদেরও চরমতম পরীক্ষা। শুধু পেশাগত দক্ষতার নয়, শারীরিক সক্ষমতারও। তাই প্ল্যান ছিল, ২ অক্টোবর এসে একটা দিন একটু থিতু হয়ে ৪ তারিখ থেকে পুরোদমে কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ব।

অথচ যা হলো, তেমন কিছু এত বছরের পেশাদার জীবনেই এই প্রথম। দেশে থাকতেই বিশ্বকাপ তো শুরু হয়ে গেছেই, বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ধরাই হয়ে দাঁড়িয়েছিল বড় চ্যালেঞ্জ। সেই ম্যাচ ধর্মশালায় বলে চ্যালেঞ্জটা আরও বড়। সরাসরি ফ্লাইট নেই। সহজতম পথ ঢাকা টু দিল্লি, দিল্লি টু ধর্মশালা। সেভাবে আসতেই ঢাকার বাসা থেকে বেরোনোর সময় ধরে হিসাব করলে রাস্তায় (এবং আকাশে) ছিলাম ১৫ ঘণ্টার বেশি। দিল্লিতে ইমিগ্রেশন সেরে লাগেজ নেওয়ার পর ধর্মশালার ফ্লাইট ধরতে ৩ নম্বর টার্মিনাল থেকে শাটল বাসে ১ নম্বর টার্মিনাল। সেই দূরত্ব এমনই যে একবার মনে হলো, বাসেই আমাদের ধর্মশালা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে না তো!

ধর্মশালায় ম্যাচ দেখতে আসছেন, বাংলাদেশের এমন অনেকের সঙ্গে ঢাকাতেই দেখা হয়েছিল। দিল্লি এয়ারপোর্টে সংখ্যাটা আরও বাড়ল। দিল্লি থেকে ধর্মশালার ফ্লাইটের অর্ধেকের বেশি যাত্রীই দেখা গেল বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচের দর্শক। সময়টা তাই খারাপ কাটল না। কিন্তু শরীরকে যতই মহাশয় নাম দেওয়া হোক, সবকিছু তার সয় না। ধর্মশালা বিমানবন্দর থেকে হোটেলে কোনোমতে স্যুটকেসটা রেখেই মাঠে ছুটে আসতে হয়েছে। ম্যাচের দিন উপমহাদেশের স্টেডিয়ামে অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড নিয়ে ঢুকতে যথেষ্ট বিড়ম্বনা পোহাতে হয়। আর এখানে তো অ্যাক্রেডিটেশন কার্ডও নেই। ধর্মশালার স্টেডিয়াম ঘেরা পাহাড়ি রাস্তায় একটু পরপর পুলিশকে বুঝিয়ে, অনুরোধ করে শেষ পর্যন্ত উদ্দিষ্ট গেটের কাছাকাছি আসতে সক্ষম হলাম।

গেটে একজনের অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড নিয়ে থাকার কথা। কিন্তু সেই পর্যন্ত পৌঁছার উপায় কী! মিডিয়া গেটে যেতে হয় ধর্মশালা সরকারি কলেজের মধ্য দিয়ে। কলেজের ছাত্রছাত্রী তো আছেই, খেলা দেখাতে নিয়ে আসা স্কুলের ছেলেমেয়েদেরও মাইলখানেক লম্বা লাইন। এগোতেই পারছি না। শেষ পর্যন্ত কীভাবে পেরেছি, সেই গল্প না হয় পরে বলি। ধর্মশালা কেমন লাগছে, সেটাও।

সম্পর্কিত খবর

“আফগানিস্তানের সাফল্যের রহস্য পরিকল্পনায় স্থির থাকা ও দুর্বলতা ধরে কাজ করা” – শহীদি

Shopnamoy Pronoy

চাকরি ফেরত পাচ্ছেন ২৭ বিসিএসের বঞ্চিত ১১৩৭ জন

gmtnews

জাদেজার ম্যাজিক: স্মিথের উইকেট বাঁধা কীভাবে সম্ভব?

Shopnamoy Pronoy

মন্তব্য করুণ

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই অপ্ট আউট করতে পারেন। স্বীকার করুন বিস্তারিত