বিচারকাজের গতি বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বিচারকরা দ্রুত বিচারকার্য কিভাবে সম্পন্ন করবেন, সেটা নিয়ে ভাবতে হবে। কারণ ডিজিটাল যুগে বিশ্বব্যাপী কাজ করার গতি বহুগুণ বেড়ে গেছে। তাদের এটা বিবেচনায় নিতে হবে।
গতকাল বুধবার বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সহকারী জজ ও সমপর্যায়ের বিচারকদের জন্য আয়োজিত ৪৬ ও ৪৭তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বিচারকদের উদ্দেশে আইনমন্ত্রী বলেন, যুগ কিন্তু পাল্টে গেছে। ডিজিটাল যুগের বিচারক হিসেবে বিচারকার্যে দেরি হলে ভালভাবে দেখবে না জনগণ। তারা দ্রুত ন্যায়বিচার চায়। তিনি বলেন, একটি কথা চালু আছে-জাস্টিস ডিলেইড ইজ জাস্টিস ডিনাইড এবং জাস্টিস হারিড ইজ জাস্টিস বারিড, আপনাদেরকে এই দুটোর মধ্যে সমন্বয় করতে হবে।
তিনি বলেন, একটি অভিযোগ আছে, মামলার কারণ খুঁজে বের করতে, চিহ্নিত করতে এবং কর্মস্থল থেকে বিচারিক আদালতে আনতে অনেকদিন সময় লেগে যায়। এ সমস্যা দূর করার অংশ হিসেবে মামলার চার্জশিটে মেডিকেল অফিসার ও তদন্ত কর্মকর্তার মোবাইল নাম্বার যুক্ত করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এসএমএস’র মাধ্যমে মেডিকেল অফিসার ও তদন্ত কর্মকর্তাসহ প্রত্যেক স্বাক্ষীকে মামলার তারিখ জানানো হয়। মন্ত্রী বলেন, এখন বিচারকদের নিশ্চয়তা দিতে হবে, যেদিন মেডিকেল অফিসার বা তদন্ত কর্মকর্তা বা অন্য কোন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসবেন, সেদিন যেন সাক্ষীটা হয়।
আনিসুল হক বলেন, নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতু করা হয়েছে। এই সেতুর কল্যানে ঢাকা থেকে চার ঘন্টায় বরগুণায় যাওয়া যাচ্ছে। যেটা আগে লাগত কমপক্ষে ১০-১২ ঘন্টা। বিচারকাজের ক্ষেত্রেও এই গতিটা মেইনটেইন করার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, অন্যথায় ৩৯ লক্ষ মামলাজট কমিয়ে আনা যাবে না।
তিনি জানান, জুডিসিয়াল অফিসার আরও বাড়ানো হবে। বিচারকের সংখ্যা গিয়ে তিন হাজারে ঠেকতে হবে। জুডিসিয়াল অফিসাররা যাতে গাড়ি কেনার জন্য স্বল্পসূদে সরকারি ঋণ পান, সে ব্যবস্থা তিনি করবেন বলেও বিচারকদের আশ্বস্ত করেন।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার বক্তব্য রাখেন।