বাংলাদেশ বিপুল ভোটে আবারও জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় বিএনপি ও দেশবিরোধীদের বিভিন্ন অপপ্রচার মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে বলে দাবি করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।
আজ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
গতকাল মঙ্গলবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভোটাভুটির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ পঞ্চমবারের মতো ২০২৩ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত তিন বছর মেয়াদে মানবাধিকার পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হয়। বাংলাদেশ ১৮৯টির মধ্যে ১৬০টি ভোট পেয়েছে। ৪৭ সদস্যের এই কাউন্সিলে বাংলাদেশ এর আগে ২০০৬, ২০০৯, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে সদস্য নির্বাচিত হয়েছিল। তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৬০ ভোট পেয়ে পুনরায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হয়েছে। আপনারা জানেন, বিএনপি ও কিছু কিছু ব্যক্তিবিশেষ এবং চিহ্নিত কয়েকটি সংগঠন ক্রমাগতভাবে বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে অপপ্রচার করছে। তারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভুল তথ্য–উপাত্ত প্রেরণ করে বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা করছিল এবং সেই প্রেক্ষাপটের মধ্যেই বাংলাদেশ সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হয়েছে। এতেই প্রমাণিত হয়, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে তারা যে অপপ্রচার চালিয়ে এসেছে, যেভাবে বিদেশিদের বিভক্ত করার চেষ্টা করেছে, সেগুলো অসার এবং কাজে আসেনি; বরং প্রমাণিত হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার সঠিক পথেই আছে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশে মানবাধিকারের সর্বোচ্চ লঙ্ঘিত হয়েছে যখন জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় থাকতে বিনা বিচারে সেনাবাহিনীর হাজার হাজার অফিসার-জওয়ানকে হত্যা করেছে। এমন ঘটনাও ঘটেছে যে ফাঁসি কার্যকর হয়েছে আগে, বিচারের রায় হয়েছে পরে এবং দিজ আর ডকুমেন্টেড, অর্থাৎ এগুলোর প্রমাণ রয়েছে। জিয়ার আমলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।’ বিএনপির সমসাময়িক রাজনীতি প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি বিভাগীয় সমাবেশের নামে যদি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালায়, তাহলে সরকার জনগণের নিরাপত্তা বিধানে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং জনগণ যদি প্রতিরোধ গড়ে তোলে, আমাদের দলও সঙ্গে থাকবে। আর বিএনপির পাঁচজন সংসদ সদস্যের কেউ পদত্যাগ করলে সেখানে উপনির্বাচন হবে।’
বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ে বিএনপির সমালোচনার জবাবে এ সময় মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি বিদ্যুৎ না দিয়ে শুধু খাম্বা দিয়েছিল। আর আমরা যখন ২০০৯ সালে সরকার গঠন করি, তখন দেশের মাত্র ৪০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ পেত, তা–ও সব সময় নয়, বিদ্যুৎ মাঝেমধ্যে আসত। আজকে শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ–সুবিধার আওতায় আসছে। সুতরাং বিএনপি যখন এ ধরনের কথা বলে, তখন মানুষ হাসে।’
মতবিনিময় শেষে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ দিনাজপুর পৌর ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে ভার্চ্যুয়ালি বক্তব্য দেন।