বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার স্বার্থে বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকা জরুরি। আর এখানেই ভারতের গুরুত্ব। ভারতে সফররত বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী আজ মঙ্গলবার কলকাতা থেকে দিল্লি এসে প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক মন্তব্যে এ কথা বলেন।
পরে প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, স্থিতিশীলতা বজায় না থাকলে কোনো দেশ বা অঞ্চল উন্নতির সোপানে হাঁটতে পারে না। আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা তাই গুরুত্বপূর্ণ। গত এক দশকে বাংলাদেশে যে উন্নয়ন হয়েছে, তা এই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণে। এ উন্নয়নে ভারতেরও এক বড় ভূমিকা রয়েছে। সে ভূমিকার একটা নিদর্শন আগামী বছর দিল্লিতে অনুষ্ঠিতব্য জি–২০ শীর্ষ সম্মেলন। সে সম্মেলনে বাংলাদেশ আমন্ত্রিত। তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সেই আমন্ত্রণ আমরা সাদরে গ্রহণ করেছি।তিস্তা চুক্তির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সর্বত্র এ প্রশ্নের মুখোমুখি আমাদের হতে হয়। এতে বিষয়টি কতখানি গুরুত্বপূর্ণ, তা অনুধাবন করা যায়।
আমরা সবাই জানি ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বাধ্যবাধকতা কোথায়। তা সত্ত্বেও এ ক্ষেত্রে অগ্রগতি হচ্ছে। আশাদের আশা, জট কাটিয়ে চুক্তি সই হবে।’বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী জোরগলায় বলেছেন, দেশে কেউ সংখ্যালঘু নন। প্রত্যেক নাগরিকের সমান অধিকার রয়েছে। বাংলাদেশের শাসক দল সজাগ ও সতর্ক বলে এ বছর দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে কেটেছে। শুধু তা–ই নয়, আগের বছরের তুলনায় এ বছর দেশে দুর্গাপূজার মণ্ডপের সংখ্যা বেড়েছে ৭০০টি।বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদানের কথা স্মরণ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, দুই দেশের সহযোগিতার ক্ষেত্র ক্রমশ বিস্তার লাভ করছে। সেটা হচ্ছে বলেই দুই দেশ অর্থনৈতিক দিক থেকে লাভবান হচ্ছে। নিম্ন আয়ের দেশ থেকে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। ভারতের সক্রিয় সহযোগিতা বাংলাদেশের সহায়ক। তিনি বলেন, অপরাধ না করেও যে দুই দেশ জলবায়ু পরিবর্তনের বলি, তা হলো বাংলাদেশ ও ভারত। তা সত্ত্বেও দুই দেশ উন্নতি করে চলেছে। তথ্যমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে করোনাকালে ভারতের অবস্থানের উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, দুই দেশের হাতে হাত মিলিয়ে চলা সময়ের দাবি। দুই দেশের বাণিজ্যঘাটতির অসাম্য দূর করার প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ করে তিনি বলেন, যে পরিমাণ তৈরি পোশাক বাংলাদেশ থেকে ভারত আমদানি করে, তার পরিমাণ বাড়া দরকার। তথ্যমন্ত্রী অবশ্য জানাতে পারেননি, কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ চুক্তি (সেপা) আলোচনা কবে শুরু হবে। নাগরিকত্ব সংশোধন আইন (সিএএ) নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে চলমান মামলায় ভারত সরকার যে হলফনামা পেশ করেছে, সে সম্পর্কেও তথ্যমন্ত্রী কোনো মন্তব্য করতে চাননি। হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সিএএ আপনাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আর সরকারি হলফনামা বিচারাধীন। আমার এ নিয়ে মন্তব্য সাজে না।