সাড়ে চার বছরের নির্মাণযজ্ঞ শেষে খুলে দেওয়া হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল। এই টানেল চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা থেকে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে আনোয়ারা উপজেলাকে যুক্ত করেছে। ফলে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে সাগর উপকূল ঘিরে শিল্পের নতুন দুয়ার খুলে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ শনিবার সকালে এই টানেল উদ্বোধন করবেন। পরদিন চার লেনের এই টানেল যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। টোল দিয়েই টানেল ব্যবহার করতে হবে। শুধু দেশেই প্রথম নয়, দক্ষিণ এশিয়ায় নদীর তলদেশে প্রথম সড়ক টানেল এটি।
কর্ণফুলী নদী সারা দেশ থেকে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারকে আলাদা করেছে। প্রায় ৯১ বছর আগে এই নদীর ওপর প্রথম কালুরঘাট রেলসেতু নির্মাণ করা হয়েছিল। এই সেতু থেকে সাত কিলোমিটার ভাটিতে ১৯৮৯ সালে প্রথম সড়ক সেতু নির্মাণ করা হয়। নড়বড়ে হয়ে যাওয়ায় ২০১০ সালে একই স্থানে কর্ণফুলী তৃতীয় শাহ আমানত সেতু নির্মাণ করা হয়।
শাহ আমানত সেতু থেকে নদীর মোহনা পর্যন্ত নতুন করে সেতু নির্মাণের সুযোগ নেই। কেননা, সেতু হলে নদীতে পলি জমে চট্টগ্রাম বন্দর অচল হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। তাই এই সেতুর ২১ কিলোমিটার ভাটিতে কর্ণফুলী নদীর মোহনার কাছে নদীর তলদেশে নির্মাণ করা হয়েছে টানেল। এটি শুধু শাহ আমানত সেতুর ওপর চাপ কমাবে না, আনোয়ারায় পরিকল্পিত শহর সম্প্রসারণের সুযোগ খুলে দিয়েছে। কক্সবাজারের মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের টার্মিনাল চালু হবে ২০২৬ সালে। এই টার্মিনাল চালু হলে সারা দেশ থেকে পণ্য আনা–নেওয়া করা যাবে টানেল দিয়ে।
ঢাকা থেকে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারগামী গাড়ি এখন চট্টগ্রাম শহরে না ঢুকে ফৌজদারহাটে টোল রোড এবং চট্টগ্রামের সাগরপাড়ে আউটার রিং রোড হয়ে সরাসরি টানেলের মাধ্যমে আনোয়ারায় চলে যাবে। একইভাবে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী গাড়ি একই পথে যেতে পারবে। এতে অন্তত ৪০ কিলোমিটার দূরত্ব কমবে।
বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, টানেলের মাধ্যমে সারা দেশের সঙ্গে দক্ষিণ চট্টগ্রাম–কক্সবাজারের যোগাযোগ আরও সহজ হলো। এখন দক্ষিণ চট্টগ্রামে পরিকল্পিতভাবে নতুন শহর ও নতুন নতুন শিল্প এলাকা গড়ে তোলা যাবে।