ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বেশির ভাগ পশ্চিমা দেশের সমর্থন পাচ্ছে ইসরায়েল। তবে এ ক্ষেত্রে কিছুটা ব্যতিক্রম স্পেন। দেশটির সরকার ইসরায়েলে হামাসের হামলার নিন্দার পাশাপাশি ইসরায়েলের হামলাকেও বলেছে ‘অগ্রহণযোগ্য’।
ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গাজায় যে ১৬ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। ইসরায়েলের নির্বিচার বোমা হামলা ও গোলাবর্ষণে প্রাণ হারানো ফিলিস্তিনের হাজারো শিশুর নিথর দেহের শত শত ছবি ও ভিডিও চিত্র অনলাইন মাধ্যমগুলোয় ভেসে বেড়াচ্ছে।
গত সপ্তাহে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ এসব ছবি–ভিডিওর প্রসঙ্গ টেনে বলেছেন, ‘(গাজায়) শিশুদের প্রাণহানি যেভাবে বাড়ছে এবং যেসব ভিডিও ফুটেজ আমরা দেখছি, তাতে আমার মারাত্মক সন্দেহ হচ্ছে যে ইসরায়েল মানবাধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলছে কি না।’ সানচেজ আরও বলেন, ‘আমরা গাজায় যা ঘটতে দেখছি, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’
সানচেজের এমন মন্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রীর এ মন্তব্যের জেরে জেরুজালেমে নিযুক্ত স্পেনের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে তিরস্কার করেছে তেল আবিব। এখানেই ক্ষান্ত দেয়নি। স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে নিযুক্ত ইসরায়েলের
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ইউরোপের প্রায় সব দেশই তেল আবিবকে সমর্থন দিচ্ছে। ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার নিন্দা জানাচ্ছে না দেশগুলো। কিন্তু ইউরোপের সবচেয়ে পরিচিত ও শীর্ষস্থানীয় নেতা হিসেবে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানালেন পেদ্রো সানচেজ। তিনি ছাড়া শুধু আয়ারল্যান্ড ও বেলজিয়ামের রাজনীতিকেরা গাজায় চলমান ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানাচ্ছেন।
গত ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা শুরুর পর থেকেই বিক্ষোভ হচ্ছে দেশটিতে। গাজায় হামলার প্রতিবাদে স্পেনজুড়ে শহরে শহরে বিক্ষোভ করে আসছেন দেশটির নাগরিকেরা।
স্পেনের সংখ্যালঘু বামপন্থী সরকারের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পেদ্রো সানচেজ। এ জোট সরকারে অতি বামপন্থী হিসেবে পরিচিত সুমার ও পোদেমোসের মতো দলও শরিক। বামপন্থী এসব দল ও দলের নেতারা প্রকাশ্যে ফিলিস্তিনিদের অধিকার রক্ষা ও তাঁদের স্বাধীনতার পক্ষে সমর্থন দিয়ে আসছেন।
স্পেনের ক্যান্টাবারিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবিধানিক আইন বিভাগের অধ্যাপক হোসু ডি মিগুয়েল স্পেনকে ‘সমাজতাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে ফিলিস্তিনপন্থী একটি দেশ’ হিসেবে বর্ণনা করছেন। তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন সানচেজ। জোট হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই অবস্থান না নিলেও স্পেন সে অবস্থান নিয়েছে।’
স্পেন সরকারের এমন অবস্থানের ব্যাখ্যায় অধ্যাপক মিগুয়েল আরও বলেন, ‘স্পেনের (জোট) সরকারে এমন অনেক দল রয়েছে, যেসব দল ইসরায়েল নয়, ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহানুভূতিশীল।