বাংলাদেশের প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মো. আনোয়ারুল ইসলামকে প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন-চ্যানেল আই প্রকৃতি সংরক্ষণ পদক-২০২২ প্রদান করা হয়েছে।
গতকাল শনিবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের চ্যানেল আইয়ের চেতনা চত্বরে এক অনুষ্ঠানে অধ্যাপক মো. আনোয়ারুল ইসলামের হাতে এ পদক তুলে দেওয়া হয়। পদক তুলে দেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফারহিনা আহমেদ, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবদুল হামিদ, বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী এবং প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এবং ইমপ্রেস গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু প্রমুখ।
শিক্ষাবিদ ও বন্য প্রাণী গবেষক অধ্যাপক মো. আনোয়ারুল ইসলামের জন্ম ১৯৫৫ সালে ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।
অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম ১৯৮১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিসাওয়ার স্কুল অব ট্যাক্সিডার্মি থেকে ডিপ্লোমা ডিগ্রি অর্জন করেন ও ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্ট্রির শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করেন। ১৯৮৬ সালে প্রখ্যাত পাখিবিজ্ঞানী সালীম আলীর অধীন পাখি নিয়ে গবেষণা করে বোম্বে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।
২০২০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর গ্রহণ করে বর্তমানে বন্য প্রাণীবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়াইল্ডটিমের প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব পালন করছেন আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি আইইউসিএন বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত বাংলাদেশের বিপন্ন মেরুদণ্ডী প্রাণীর ‘রেডলিস্ট’ প্রণয়ন ও সম্পাদনা করেন, যার ভিত্তিতে প্রণীত হয়েছে বন্য প্রাণী সংরক্ষণের নীতিমালা ও আইন। তাঁর বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্যসংক্রান্ত গবেষণাধর্মী নিবন্ধের সংখ্যা ৭০-এর বেশি ও প্রকাশিত গ্রন্থ ১০টির বেশি।
প্রকৃতি সংরক্ষণে ২০০৯ সালের ৩ ডিসেম্বর ‘প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১০ সালের ১ আগস্ট চ্যানেল আইয়ে শুরু হয় নতুন মাত্রার গবেষণা, তথ্যবহুল, সচেতনতা ও শিক্ষামূলক ধারাবাহিক প্রামাণ্য অনুষ্ঠান ‘প্রকৃতি ও জীবন’। প্রকৃতি সংরক্ষণ পদক প্রদান শুরু হয় ২০১১ সালে। গবেষণা, জনসচেতনতা সৃষ্টিসহ প্রাণ-প্রকৃতি সংরক্ষণে নানা কাজ করে যাচ্ছে প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন।