এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বিশ্বব্যাপী নির্ভরযোগ্য ও সাশ্রয়ী মূল্যে জ্বালানি সেবার সুযোগ সর্বজনীন করতে বাড়াতে সহায়তার লক্ষ্যে এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে স্বল্প মাত্রার কার্বন নিঃসরণ-বান্ধব একটি নতুন জ্বালানি নীতি অনুমোদন করেছে।
এডিবির প্রেসিডেন্ট মাসাৎসুগু আসাকাওয়া বলেন, জ্বালানি অন্তর্ভুক্তিমূলক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের বিষয়, কিন্তু জলবায়ু ও পরিবেশের ওপর ক্ষতিকর প্রভাবের বিনিময়েই জ্বালানি ব্যবস্থার সম্প্রসারণ হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এডিবির নতুন জ্বালানি নীতি আমাদের উন্নয়নশীল সদস্য দেশগুলোকে (ডিএমসি) নির্ভরযোগ্য, সাশ্রয়ী মূল্যের ও দূষণমুক্ত জ্বালানি লাভের সুযোগ সম্প্রসারণের গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি কাজে সহায়তা করবে।’
এডিবি প্রেসিডেন্ট বলেন, নতুন কয়লা বিদ্যুৎ উৎপাদনে অর্থায়ন না করতে এডিবির দৃঢ় প্রতিশ্রুতির নিরিখে এ নতুন নীতি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘২০১৯-২০৩০ সালে ডিএমসিকে জলবায়ু অর্থায়নে আমাদের ১০০ বিলিয়ন ডলার সরবরাহ করার উচ্চাকাক্সক্ষার আলোকে এটি পরিবেশগতভাবে টেকসই জ্বালানি ভবিষ্যৎ গড়তে এডিবি’র অবদান রাখার ক্ষেত্রে একটি সুস্পষ্ট পথ দেখাবে।
এডিবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উন্নয়নশীল এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকা জুড়ে জ্বালানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে দ্রুত অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু এ অঞ্চলের প্রায় ৩৫ কোটি মানুষের কাছে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ নেই এবং প্রায় ১৫ কোটি মানুষের এখনও বিদ্যুৎ সুবিধা-বঞ্চিত।
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং নগরায়ন অব্যাহত রাখতে যথেষ্ট অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসহ সাশ্রয়ী ও নির্ভরযোগ্য জ্বালানি ব্যবস্থা উন্নয়নের প্রয়োজন হবে।
এ জন্য, আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার পরিস্থিতি থেকে প্রতীয়মান হয় যে এ অঞ্চলে স্থাপিত বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা প্রতি বছরে ৭% বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৯ সালের ৩,৩৮৬ গিগাওয়াট থেকে ২০৩০ সাল নাগাদ ৬,১১৩ গিগাওয়াটে উন্নীত হতে পারে।
এই অঞ্চলে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনে বিনিয়োগ ২০৩০ সাল নাগাদ প্রতি বছর ১.৩ ট্রিলিয়ন ডলারে পৗঁছতে পারে, যা আগের দশকের তুলনায় দ্বিগুণ।
এডিবির ২০২১ জ্বালানি নীতি এই অঞ্চলে জ্বালানি প্রবেশাধিকার ও সুরক্ষা এবং জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশগত স্থায়িত্ব উভয় দিক থেকে এই পরিবর্তনগুলোর মোকাবেলায় পদক্ষেপ নিতে সহায়তায় এডিবিকে নির্দেশনা দেবে।
এডিবি ২০০৯ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ৪২২ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থায়নে এ অঞ্চলের জ্বালানি খাতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে কিন্তু এই অঞ্চলের জ্বালানি অর্থায়নে আরও বেশি গতিশীলতা প্রয়োজন।
নতুন জ্বালানি নীতিতে প্রয়োজনে বাণিজ্যিক বিনিয়োগ কাজে লাগাতে সবচেয়ে কঠিন জ্বালানি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এডিবি’র সম্পদকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।
এডিবি তাদের সকল কার্যক্রম প্যারিস চুক্তির লক্ষ্যের সাথে সমন্বয় করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং জলবায়ু অর্থায়নে নিজস্ব সম্পদ থেকে সরবরাহের উচ্চাকাক্সক্ষা এই মাসে বাড়িয়ে ২০১৯-২০৩০ পর্যন্ত ১০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করেছে।
এটি জ্বালানিসহ সকল খাতে জলবায়ু অভিযোজন ও প্রশমনে সহায়ক হবে।