কোথায় যাবেন ফিলিস্তিনের উত্তর গাজার বাসিন্দারা? ইসরায়েলের নির্দেশের পর প্রাণভয়ে উপত্যকাটির উত্তর থেকে দক্ষিণে পালাচ্ছেন তাঁরা। তবে সেখানেও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা নেই। চলছে মুহুর্মুহু বোমাবর্ষণ। ইসরায়েল নির্বিচার হামলা চালাচ্ছে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছোটা এই মানুষগুলোর ওপরও। ইসরায়েলের হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় নারী-শিশুসহ ৩২৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
হামলার শুরু থেকেই ইসরায়েল বলে আসছে, বেসামরিক লোকজন তাদের লক্ষ্য নয়। গতকাল শনিবারও ইসরায়েলি বাহিনীর এক মুখপাত্র একই কথা বলেছেন। তবে সামনে আসা ভিডিও ও ছবিগুলো তুলে ধরছে ভয়াবহ চিত্র। একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, উত্তর গাজা থেকে পালানোর সময় বেসামরিক লোকজনের ওপর বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ওই হামলায় ১২ শিশুসহ ৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে। রয়েছেন নারীও। হামলায় হতাহতের ঘটনা ঘটেছে মধ্য গাজার দেইর এল-বালাহ শহরের কাছের একটি বাড়িতেও। সেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন উত্তরাঞ্চল থেকে পালিয়ে আসা মানুষ।
ইসরায়েলের হামলায় ধ্বংস হয়েছে বাড়িটি। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া নিজের বাড়ি দেখতে এসেছেন এই নারী। গতকাল দক্ষিণ গাজার রাফাহ শিবির এলাকায়ছবি: এএফপি
স্থল হামলার প্রস্তুতির মুখে শুক্রবার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উত্তর গাজার ১১ লাখ বাসিন্দাকে দক্ষিণে চলে যেতে বলেছিল ইসরায়েলি বাহিনী। পরে গতকাল বিকেল চারটা পর্যন্ত ছয় ঘণ্টা সময় বাড়িয়ে দেয় তারা। উত্তর গাজা থেকে দক্ষিণে যেতে নির্ধারণ করে দেওয়া হয় দুটি সড়ক। ইসরায়েলের এই নির্দেশের সমালোচনা করেছে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ইসরায়েল সরকারকে বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন।
অবরুদ্ধ গাজায় গতকালও শত শত বোমা ফেলেছে ইসরায়েল। উপত্যকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় নারী-শিশুসহ ৩২৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে ৭ অক্টোবর হামলা শুরুর পর থেকে সেখানে অন্তত ২ হাজার ২১৫ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হলো। আহত হয়েছেন ৮ হাজার ৭১৪ জন। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, গত আট দিনের হামলায় গাজায় ১ হাজার ৩০০টির বেশি ভবন ধ্বংস হয়েছে। অন্যদিকে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে গাজায় স্থল অভিযান নিয়ে গতকাল রাতে আবারও হুমকি দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, গাজায় স্থল অভিযান শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। জল, স্থল ও আকাশ—তিন দিক দিয়েই হামলা চালানো হবে। তবে হামলার সুনির্দিষ্ট কোনো সময় জানানো হয়নি বিবৃতিতে।