নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জের হাসেম ফুড এন্ড বেভারেজের সেজান জুস কারাখানার অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পর উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করেছে ফায়ার সার্ভিস। শনিবার (১০ জুলাই) বিকালে ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করেন।
ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা জানিয়েছেন,পঞ্চম ও ৬ষ্ঠ তলাসহ পুরো ভবনটিতে তল্লাশী চালিয়ে নতুন করে আর কোনো মরদেহ খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিকেল পাঁচটায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ভবনটিতে সর্বশেষ তল্লাশি চালিয়ে অভিযান সমাপ্ত ঘোষনা করেন । তবে দীর্ঘ সময় ধরে আগুন জ¦লার কারনে ভবনের পঞ্চম তলার ছাদের একটি বড় অংশ ধ্বসে পড়েছে। একই কারনে পুরো ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগের উপ পরিচালক।
তিনি বলেন, ভবনটিতে যেসব পণ্য উৎপাদিত হতো তাতে প্লাষ্টিক, রেজিন, প্লাস্টিকের বোতল, প্লাষ্টিকের মোড়কসহ দাহ্য পদার্থ এবং কেমিক্যাল ও তেল জাতীয় পদার্থ থাকার কারনে দীর্ঘ সময় আগুন জ্বলে।
গত বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটা থেকে আজ শনিবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ৪৮ ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন সম্পূর্ন নেভাতে সক্ষম হয়।
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন) ও তদন্ত কমিটির জানান, সেজান জুস কারখানার ভেতরে মেশিন, গোডাউন ও ক্যামিকেল এক সাথে রাখার কারনে আগুনের সুত্রপাত হয়ে থাকতে পারে। কারন কারাখানার প্রতিটি ফ্লোরে দাহ্য রাসায়নিক পদার্থ স্তুুপ করে রাখা হয়েছিলো।
তিনি বলেন,মালামাল স্তুপ করে রাখার কারনেই আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয়েছে। এছাড়া ক্যামিকেলসহ দাহ্য পদার্থ ও প্লাস্টিক, ফয়েল কাগজ , কার্টনসহ বিভিন্ন মালামাল থাকার করনেই আগুন ভয়াবহ রুপ ধারণ করেছে। যে কারনে অনেক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, ভবন নির্মাণে ত্রুটি ছিলো। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক জানান, অগ্নি দূর্ঘটনার পরেই নিহত ও আহতদের পাশে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
তিনি জানান,নিহতদের আত্মীয় স্বজন থেকে এখন পর্যন্ত ৪৫ জনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এগুলি নিহতদের নমুনার সাথে ম্যাচ করে লাশের পরিচয় সনাক্ত করে যত দ্রুত সম্ভব লাশ হস্তান্তর করা হবে।
আহত যারা হাসপাতালে ভর্তি আছেন তাদের চিকিৎসার তদারকি করছে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে পাঁচটা রুপগঞ্জের কর্ণগোপে হাসেম ফুড বেভারেজের সেজান জুস কারখানায় আগুন লাগে। আগুনে ভবন থেকে ৪৯ জনের পোড়া মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া প্রথম দিন ছাঁদ থেকে লাফিয়ে পড়ে আরো তিন জনের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে মোট ৫২ জন মারা যায়।