রাজধানীর পরীবাগ এলাকার বাসিন্দা ইকবাল হোসেন হাতিরপুল বাজারে এসেছিলেন বাজার করতে। কথা হলে জানালেন, এ রোদে বেশিক্ষণ বাইরে থাকা যায় না।
একটা কাজ ছিল, তাই বের হয়েছি। কাজ শেষ করেই দ্রুত বাসায় ফিরব।
প্রায় একই ধরনের মন্তব্য বেসরকারি চাকরিজীবী জাহিদ হাসানের। কথা হলে বলেন, পেটের দায়ে এমন গরমের মধ্যেও বের হতে হয়। বাইরে বেশিক্ষণ থাকলে মনে হয় স্ট্রোক করব।
তীব্র গরমে সৃষ্ট তাপদাহ থেকে বাঁচতে রাস্তাঘাটে বের হওয়া থেকে বিরত রয়েছেন অনেকেই।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
তীব্র খরতাপে পুড়ছে সারা দেশ, জারি করা হয়েছে হিট অ্যালার্ট। রোদের তাপ এতই প্রখর যে বাইরে টেকা কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছে। গরম থেকে রক্ষা পেতে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না কেউ। তাই ঢাকার অলিগলি ও কোলাহলপূর্ণ স্থানগুলোতে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে লোকসমাগম একেবারেই কম।
বাইরে লোকজন কম বের হওয়ায় বিক্রিবাট্টা কমেছে এলাকাভিত্তিক দোকানগুলোতে। কয়েকজন চা বিক্রেতা বলেন, এ গরমে কেউ চা খেতে আসে না। কেউ কেউ এসে ঠাণ্ডা পানি বা কোক খায়। আর মুদি দোকানিরা বলছেন, ভরদুপুরে ক্রেতার সংখ্যা একেবারেই কম। মূলত সন্ধ্যার পর ক্রেতাসমাগম বৃদ্ধি পায়।
গরমের প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে ঢাকার গণপরিবহনেও। সাধারণত সবসময় ঢাকার বাসগুলোতে যাত্রীর আধিক্য দেখা যায়। তবে দুপুরের দিকে বেশিরভাগ বাসই প্রায় ফাঁকা দেখা গেছে।
যাত্রীরা বলছেন, গরমে বাসের ভেতরে হাঁসফাঁস পরিস্থিতি তৈরি হয়। ছাদের টিন থেকে গরম নেমে আসে। অনেকে বিকল্প উপায়ে বা রোদ চড়া হওয়ার আগেই গন্তব্যে পৌঁছান। দুপুরের সময় একান্ত বাধ্য না হলে কেউ বাসে চড়ছেন না। অনেকেই আবার স্বস্তি নিচ্ছেন মেট্রোরেলে।
বিভিন্ন বাসের হেলপাররা বলেন, মূলত গরমের কারণেই বাসে যাত্রীর পরিমাণ কমে গেছে। ভোগান্তি এড়াতে অনেকে বাসে না চড়ে সিএনজি বা মোটরসাইকেলে চড়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন। অনেকেই আবার মেট্রোরেলে যাচ্ছেন এসির বাতাস খেতে খেতে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, ঢাকায় তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আর জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে বিরাজ করতে পারে অস্বস্তি।