কোভিড সংক্রমণের বিরুদ্ধে ফাইজার ও মডার্নার এমআরএনএ ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার হার ছিল ৯১ শতাংশ। তবে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ অধিক হারে ছড়িয়ে পড়ার পর এ হার ৬৬ শতাংশে নেমে এসেছে বলে দেখা যায় মার্কিন স্বাস্থ্যকর্মীদের সাম্প্রতিক প্রকাশিত এক গবেষণায়।
ভ্যাকসিন দুটির অনুমোদনের পর স্বাস্থ্যকর্মী, জরুরি সেবায় নিয়োজিত কর্মীদের টিকাদান শুরুর পর থেকে বড় পরিসরে টিকাদানে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়ে নিরীক্ষা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)।
দেশটির ছয়টি অঙ্গরাজ্যের স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের কোভিড-১৯ এর উপসর্গ দেখা যাওয়ার ভিত্তিতে প্রতি সপ্তাহে পরীক্ষা করা হয়। এর মাধ্যমে গবেষকরা উপসর্গযুক্ত ও উপসর্গবিহীন কোভিড সংক্রমণের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিনের কার্যাকারিতা পরীক্ষা করেন।
২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সালের ১০ এপ্রিল পর্যন্ত গবেষণার প্রাথমিক সময়ে ভ্যাকসিন নিয়েছেন ও নেননি এমন ব্যক্তি এবং যতোটুকু সময় পর্যন্ত তাদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল তার ওপর ভিত্তি করে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার হার ৯১ শতাংশের মতো ছিল বলে দেখতে পান গবেষকরা।
তবে, ১৪ আগস্টের আগের সপ্তাহগুলোতে যখন অধিক সংক্রামক ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট অধিক হারে ছড়িয়ে পড়ে, ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা ৬৬ শতাংশে নেমে আসে।
গবেষকরা জানান, ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা কমে আসার পেছনে বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে। সময়ের সঙ্গে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার হার কমে আসার বিষয়টিও রয়েছে এরমধ্যে। তার ওপর, ৬৬ শতাংশ কার্যকারিতার হারের বিষয়টি খুব অল্প সময়ের মধ্যে অল্প কিছু মানুষের সংক্রমণের পরীক্ষায় উঠে এসেছে।
সাম্প্রতিক আরও বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিনের কার্যাকারিতার হার কমে এসেছে, তবে বিভিন্ন গবেষণার ফলাফলে ভিন্ন ভিন্ন কার্যকারিতার হার উঠে এসেছে।
নিউইয়র্কের রোগীদের ওপর চালানো সিডিসির সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, সংক্রমণের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার হার কমে গেলেও, মারাত্মক অসুস্থতা থেকে ভ্যাকসিন এখনো ৯০ শতাংশের বেশি সুরক্ষা দেয়।
লস অ্যাঞ্জেলেসের রোগীদের ওপর চালানো সিডিসির আরেক গবেষণায় দেখা গেছে, ভ্যাকসিন না নেওয়া ব্যক্তিদের কোভিডে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আশঙ্কা ভ্যাকসিন নেওয়া ব্যক্তিদের তুলনায় ২৯.২ শতাংশ বেশি।
জুলাইয়ের শুরু থেকে যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড আক্রান্তদের মধ্যে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি হয়।
ভাইরোলজিকাল জার্নালে প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০২০ সালে কোভিড আক্রান্তদের প্রথম টেস্টে যে পরিমাণ ভাইরাসের উপস্থিতি দেখা গেছে, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তদের মধ্যে তা এক হাজার গুণ বেশি।